ট্যাংরা, হালতুর পর এ বার বীরভূমের লাভপুর। আমানতকারীদের চাপে পড়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী এক দম্পতি। লাভপুর থানা এলাকার বাবনা গ্রামের ঘটনা। মৃতদের নাম লক্ষ্মণ মুখোপাধ্যায় ও বনশ্রী মুখোপাধ্যায়। নিহতদের ছোট মেয়ে জানান, তাঁর বাবা ও মা সাঁইথিয়া, আমোদপুর, বোলপুরের ৫টি বেসরকারি সংস্থা থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। অনেক দিন ধরেই সুদ-সমেত সেই টাকা জমছিল।
স্থানীয় লোকজন জানান, মিষ্টির দোকানে কাজ করে সামান্য আয় ছিল লক্ষ্মণের। দুই মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে যা জমানো ছিল, তা খরচ হয়ে যায়। তার উপরে ছিল ঋণের বোঝা। দিনের পর দিন জুড়ছিল চড়া সুদের অঙ্ক।
মেয়ে সুপ্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই ঋণের চাপেই তাঁর বাবা ও মা আত্মহত্য়া করেন। সুপ্রিয়া জানান, মঙ্গলবার বিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। সেখান থেকে বড় মেয়ের বাড়িও যান। এর পরই এই ঘটনা। মেয়ে জানান, পাওনাদাররা বার বার টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু ওই দম্পতির হাতে ঋণের কিস্তি মেটানোর টাকা ছিল না। এ দিকে পাওনাদাররা বাড়িতে আসার হুমকি দিয়েছিল। তাতেই সম্মানহানির ভয়ে এই ঘটনা বলে অনুমান পরিবারের লোকজনের।
বুধবার লক্ষ্মণের ভাই রামগোপাল মুখোপাধ্যায়ের কাছে খবর যায়, তাঁর দাদা-বৌদি নদীর ধারে বিষ খেয়ে পড়ে আছেন। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁরা প্রথমে চিকিৎসায় সাড়াও দেন। যদিও বিকাল ৫টা নাগাদ প্রথমে বনশ্রী ও পরে লক্ষ্মণের মৃত্যু হয়।
কিছু দিন আগেই কলকাতার ট্যাংরায় একই পরিবারের তিন জনের রহস্যমৃত্যু হয়। পরে তদন্তে উঠে আসে বিপুল টাকা ঋণের বিষয়টি। সেই টাকা মেটাতে না পেরে পরিবারের সকলে নিজেদের শেষ করে দিতে চেয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। বাড়ির তিন মহিলা সদস্যের মৃত্যু হলেও বেঁচে যান তিন পুরুষ সদস্য। অন্য দিকে হালতুতে এক দম্পতি তাঁদের আড়াই বছরের সন্তানকে নিয়ে আত্মঘাতী হন। তার পিছনেও ঋণের বোঝা ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। এ বার বীরভূমের লাভপুরেও একই ঘটনা।