প্রবীর কুণ্ডু, তুফানগঞ্জ
পাঁচতলা সমান উঁচু ওয়াচ টাওয়ার। পর্যটকরা যাতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, এমনই ব্যবস্থা ছিল কোচবিহারের রসিকবিলে। সেই সুযোগ আর কোথায়? চার বছরের বেশি সময় ধরে সংস্কারের নামে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার।
অথচ এই ওয়াচ টাওয়ার ছিল এই পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ। পর্যটকরা এসে ওয়াচ টাওয়ারে উঠতেন। তারপর গাছের মাথা ছাড়িয়ে অনেক উঁচুতে উঠে চোখ মেলে চাইতেন দিগন্তের দিকে। শুধু পাখি নয়, এনক্লোজারে থাকা হরিণ, চিতাবাঘের চলাফেরা দেখা যেত ওয়াচ টাওয়ার থেকে। চার বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ওয়াচ টাওয়ারের দিকে পা মাড়াতে পারছেন না পর্যটকরা।
২১০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে তুফানগঞ্জের এই রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। উত্তরবঙ্গের এই পর্যটন কেন্দ্রে সারা বছর পর্যটক আসে মূলত পরিযায়ী পাখির টানে। পরিযায়ী পাখি ছাড়াও স্থানীয় পাখিদেরও নিরাপদ আস্তানা এই নিরিবিলি পরিবেশ, জলাশয়৷ রসিকবিলের জলাশয়ের ঝুলন্ত সেতু পার হয়ে হরিণের এনক্লোজারের রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। পাঁচ তলা সমান উঁচু এই ওয়াচ টাওয়ারটি গড়ে উঠেছিল বাম আমলে।
কেন ওয়াচ টাওয়ারে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না বনদপ্তর? জানা গিয়েছে, ওয়াচ টাওয়ারের নীচে ফাটল ধরেছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও পর্যটক ওয়াচ টাওয়ারে উঠলে বিপদ হতে পারে, সেই আশঙ্কায় বনদপ্তরের কর্মীরা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। বুধবার রায়গঞ্জ থেকে রসিকবিলে বেড়াতে এসেছিলেন পর্যটক কমল নন্দী। তিনি বলেন, ‘ওয়াচ টাওয়ার এই পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ। অনেক উঁচু থেকে রসিকবিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার সুযোগ পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই।’ কোচবিহার বন বিভাগের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, ‘ওয়াচ টাওয়ারটি সংস্কারের ব্যাপারে পরিকল্পনা চলছে। সংস্কার হলেই ফের পর্যটকরা ওয়াচ টাওয়ারে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।’
কোচবিহারের এই রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রে আছে চিতাবাঘ, হরিণ, ঘড়িয়াল। ময়ূর ও নানা প্রজাতির পাখি৷ এই পর্যটন কেন্দ্রে প্রতিদিন শতাধিক পর্যটক ভিড় করেন৷ বিশেষ দিন গুলোতে সেই সংখ্যা সাতশো ছাড়িয়ে যায়। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার তো বটেই, অসম থেকে প্রতিদিন পর্যটকরা আসেন এই পর্যটন কেন্দ্রে। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য এই পর্যটন কেন্দ্রে আসে। ওয়াচ টাওয়ার চালু হলে ছাত্রছাত্রীদের প্রকৃতি পাঠের সুবিধা হবে। কবে ফের চালু হবে এই ওয়াচ টাওয়ার? প্রতীক্ষায় পর্যটকরা।