আবারও জ্বলছে শুশুনিয়া পাহাড়। মার্চের গোড়ায় ফিরল পুরোনো স্মৃতি। পাহাড়ের একাংশে মাটিতে পড়ে থাকা শুকনো পাতা জ্বলছে, ধোঁয়ায় ঢেকেছে পাহাড়। ২০২০ সালের এপ্রিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ে। ছারখার হয়ে যায় বহু গাছপালা। এর পর ২০২২ সালের মার্চ নাগাদও একই ঘটনা ঘটে। গোটা বন জ্বলতে থাকে। ২০২৪ সালের স্মৃতি ছিল সব থেকে বেশি উদ্বেগের। তিন চার দিন ধরে আগুন নেভাতে কালঘাম ছুটে গিয়েছিল বনদপ্তরের কর্মীদের। এ বারও সেই একই আতঙ্ক।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাহাড়ের একাংশে মাটিতে পড়ে থাকা শুকনো পাতায় আগুন লাগে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় পাহাড়ের একাংশে। সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে যায় শুশুনিয়া। খবর পেয়ে আগুন নেভানোর কাজে নেমেছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। তবে এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এ দিন পাহাড়ের পূর্ব অংশে ফের আগুন দেখতে পান স্থানীয়রা। পাহাড়ের গায়ে পড়ে থাকা শুকনো পাতায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে পাহাড়ের ওই অংশে। সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে যায় শুশুনিয়া পাহাড়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন বনকর্মীরা। ব্লোয়ার দিয়ে পাহাড়ের গায়ে পড়ে থাকা শুকনো পাতার স্তূপকে সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলে।
এ দিকে এই ধরনের আগুনে সব থেকে বড় ভয় থাকে বন্যপ্রাণ ও ভেষজ উদ্ভিদ পুড়ে যাওয়ার। ছাতনা পুলিশও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বনদপ্তরের বিশাল টিম গিয়ে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। প্রতি বছর এ ভাবে আগুন লাগার ফলে বিপুল পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে বনভূমির। মারা যাচ্ছে বন্যপ্রাণ, কীটপতঙ্গ। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রতি বসন্তে এই আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
কারণ দোলের আগে এই বসন্তে শুশুনিয়া পলাশে ঢাকে। সেই পলাশের সমারোহ দেখতে বহু পর্যটকই শুশুনিয়া পাহাড়ে বেড়াতে যান। কোনও ভাবে ধূমপায়ীদের অসচেতনতা এ ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর। এ ছাড়াও কেউ ইচ্ছে করে বারবার একই সময়ে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে কি না, এর পিছনে কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।
ছাতনা ফরেস্ট রেঞ্জ আধিকারিক নির্মল দাস বলেন, ‘সকাল ১০টা-১১টা নাগাদ আগুন লাগার খবর পাই। প্রায় এক হেক্টর জায়গায় আগুন লেগেছে। কারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে, তা আমাদের নজরে আছে। ধরা পড়লে আইন মেনে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। শুশুনিয়া একটা বড় সম্পদ। সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে আমাদের একটাই অনুরোধ, এ ভাবে জঙ্গলের কেউ ক্ষতি করবেন না।'