রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ট্রেনের ধাক্কা থেকে হাতিমৃত্যু ঠেকাতে রেলের তরফে হাতি করিডরে বসানো হচ্ছিল বিশেষ সিস্টেম। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের রাজাভাতখাওয়া এলাকায় সেই মহড়া চলাকালীন ঘটে গেল বিপত্তি। ট্রেনের হুইসল শুনে চমকে উঠে একটি হাতি পিছিয়ে যেতেই তার পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বনকর্মীর। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর আর কাজ হয়নি সেখানে। এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকাহত সকলে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়ার জঙ্গলে রেলের এলিফ্যান্ট ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেমের মহড়া চলছিল। তার জন্য আনা হয় দুটি কুনকি হাতি, ট্রেন। হাতি দুটিকে রেলট্র্যাকে তুলে পরীক্ষা করা হচ্ছিল কীভাবে ট্রেন এলে তাদের সুরক্ষিত করা যায়। এই মহড়া দেখতে অসমের মালিগাঁও থেকে এসেছিলেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চেতন কুমার শ্রীবাস্তব। তাঁর সামনেই মহড়া চলছিল। কুনকি হাতির পাশেই ছিলেন বনকর্মী, প্রাক্তন সেনা আধিকারিক সন্দীপ চৌধুরী। এমন সময় শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারগামী একটি ট্রেন আসছিল সেই রেলট্র্যাক দিয়ে। সেই ট্রেনের হুইসল শুনে চমকে ওঠে জোনাকি নামে একটি কুনকি হাতি। আর তাতেই ঘটে গেল বিপত্তি।
জোনাকি রেললাইন পেরিয়ে অন্যত্র চলে যেতে চাইলে বেসামাল হয়ে গিয়ে পড়ে পাশে দাঁড়ানো বনকর্মী সন্দীপের উপর। তাতেই পিষ্ট হয়ে যান সন্দীপ। জানা গিয়েছে, তিনি নয়ডার বাসিন্দা, প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। কিন্তু বনবিভাগের দাবি, বিষয়টি দুর্ঘটনা ছাড়া কিছুই নয়। হাতিমৃত্যু ঠেকাতে রেললাইনে বিশেষ সিস্টেমের মহড়া চলাকালীন এমন ঘটনায় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো দরকার ছিল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।