• সম্পত্তি কর আদায়ে গতি বাড়াচ্ছে বিধাননগর পুরনিগম, সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট শুরুর ভাবনা
    প্রতিদিন | ০৬ মার্চ ২০২৫
  • ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কলকাতার ধাঁচে সম্পত্তি কর আদায়ে সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট চালু করতে চাইছে বিধাননগর পুরনিগম। শুরু হয়েছে বিধাননগর পুর এলাকার সমস্ত বাড়ির নথি জোগাড় করার কাজ। মূলত মিউটেশন প্রক্রিয়ায় গতি আনার মধ্যে দিয়ে সেই প্রক্রিয়া প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছে। তবে তদানীন্তন রাজারহাট-গোপালপুর নিয়ে সমস্যা থেকে যাওয়ায় মূল প্রক্রিয়ার গতি কিছু ক্ষেত্রে থমকাচ্ছে। এলাকার বেশ কিছু ওয়ার্ডে হোল্ডিং নম্বর পুরনো রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকার একটা বড় অংশ জুড়ে ফ্ল্যাটের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ, বহু ফ্ল্যাটেরই কমপ্লিশন সার্টিফিকেট বা সিসি নেই। এক্ষেত্রে পুরসভার মিউটেশন ও কর আদায় বিভাগের আবেদন, সিসি পাওয়ার ক্ষেত্রে যদি প্রোমোটারের তরফে কোনও গাফিলতি থাকে বলে মনে হয়, তবে অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান।

    এদিকে, সিসি হাতে পেলে তবেই ব্যক্তিগত মালিকানায় সম্পত্তি করের জন্য মিউটেশনের করার আবেদন করা দস্তুর। তবে সিসি-র প্রক্রিয়া আটকে থাকায় সিসি ছাড়াই এই মুহূর্তে মিউটেশনের আবেদন জমা নিচ্ছে বিধাননগর পুরনিগম। মিউটেশন সার্টিফিকেট হাতে এলেই শুরু হচ্ছে কর আদায় প্রক্রিয়া। কর্পোরেশন জানাচ্ছে, যাঁরা নিজেদের সম্পত্তির মিউটেশন করিয়ে নিতে চান, অবিলম্বে তার আবেদন জমা করুন। ফ্ল্যাটের দলিল, জমির নথি-সহ যা যা জরুরি নথি দেওয়ার তা জমা দিন। আবেদন দ্রুত যাচাই করে সম্পত্তির ‘কভার্ড এরিয়া’-র উপর নির্দিষ্ট ফি জমা নিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। তবে আবেদন অবশ্যই অনলাইনে করতে হবে বলে জানিয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষ। হাতে-কলমে সেই কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। তার জেরেই এই অনুরোধ পুর-কর্তৃপক্ষের। তবে আবেদন করেই থমকে গেলে হবে না। তা কতদূর এগোল সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কোথাও কোনও নথি চাওয়া হলে তা-ও অনলাইনেই চাওয়া হবে। আবেদনকারীর আবেদনের নম্বর ধরেই তা দেখা যাবে। পুর-কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে অনলাইনে মিউটেশনের আবেদন আগের থেকে অনেক বেশি আসছে। তা দ্রুত যাচাইও হচ্ছে। দিনে এই মুহূর্তে ১০০-১৫০ আবেদনের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিধাননগর পুরনিগম পরপর একাধিক বাড়ি হয়ে গিয়েছে।

    অন্যদিকে, পুরনো রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা এলাকার বেশ কিছু ওয়ার্ডে একই হোল্ডিং নম্বরে একাধিক বাড়ি রয়েছে। ধরা যাক, ১ নম্বর অর্জুনপুর রোড। এক সময় এই এলাকা পঞ্চায়েতের আওতায় থাকায় হোল্ডিং নম্বরগুলি সক্রিয় ছিল। কিন্তু ওই একই হোল্ডিং নম্বরে সেইসব বাড়ির নির্দিষ্ট ঠিকানা বা ‘পোস্টাল অ্যাড্রেস’ নেই। ফলে এই নতুন বাড়িগুলির তথ্য অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের হাতে নেই। যদিও রাজারহাট বিএলআরও-সঙ্গে আলোচনা করে মৌজা ধরে ধরে সেই সমস্যা মেটানো হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন সম্পত্তি কর ও অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী। সেই সমস্ত তথ্য হাতে এলে তবেই সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার দিকে এগোবে কর্তৃপক্ষ। যদিও মিউটেশনের মাধ্যমে সম্পত্তি কর আদায়ের পরিমাণ গত আর্থিক বছরের থেকে অনেক বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন দেবরাজ। তাঁর কথায়, “আগের থেকে মিউটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পত্তি কর আদায় অনেক বেড়েছে। অনেক মানুষ এই কর প্রক্রিয়ার আওতায় এসেছেন। গত আর্থিক বছরে যার জেরে কর আদায় বেড়েছে ৩-৪ কোটি টাকা।” এই সূত্রে আরও একটি জরুরি বিষয় আলোচনায় রয়েছে। একবার সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়া চালু হয়ে গেলে কর অনাদায়ে বাড়ি বাড়ি নোটিসও পাঠানো হতে পারে। তার জন্যই মিউটেশন প্রক্রিয়া দ্রুত সেরে সম্পত্তি কর জমা দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করে ফেলার আবেদন করেছে পুর কর্তৃপক্ষ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)