সুব্রত বিশ্বাস: করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার। রক্ষণাবেক্ষণের আগে পুজো দিলেন রেলকর্মীরা। মানত করলেন, ট্রেনটি যেন আর দুর্ঘটনার শিকার না হয়।
১৯৭৭ সালে ৬ মার্চ পথচলা শুরু করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। ৪৮ বছরের যাত্রাপথে বহুবার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। ট্রেনটি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। ২০২৩ সালের ২ জুন চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়েছিল। সেদিন সন্ধ্যায় ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে দুর্ঘটনা ঘটে। অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ১৭৯ জনকে বালেশ্বরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
২০০২ সালের ১৫ মার্চ, দুপুর ২টো ৪০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলায় হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ৭টি কামরা বেলাইন হয়েছিল। সে বার ১০০ জন যাত্রী জখম হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, ওড়িশার জাজপুর কেওনঝড় রোডের কাছে বেলাইন হয় এই ট্রেন। কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটির গতি ছিল ১১৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
২০১২ সালের ১৪ জানুয়ারি, লিঙ্গরাজ স্টেশনের কাছে চেন্নাই-হাওড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় আগুনও লেগেছিল। সেই বছরই ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ, ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় করমণ্ডলের ধাক্কায় ৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৫ সালে ১৮ এপ্রিল, অন্ধ্রপ্রদেশের নিদাদাভলু স্টেশনে আগুন ধরে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। ট্রেনটির দু’টি বগি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
প্রায় দু’বছর আগে বলেশ্বরের কাছে দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও ক্ষতি ব্যাপকভাবে হয়। ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে লাইনকে ঠিক করতে বেশ সময় লেগেছিল। ট্রেনটি বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পর ফের শুরুর দিন ভিড় উপচে পড়ে। শালিমার স্টেশনে ট্রেন ধরতে উৎসাহী শ্রমিকরা জানিয়ে ছিলেন, কাজে যোগ না দিলে খাব কী? এত বিঘ্নে ট্রেনটির গুরুত্ব বিন্দুমাত্র খর্ব হয়নি! ৪৮ বছরের প্রৌঢ়ত্ব নিয়ে আজও ছুটবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।