• সিরাজের প্রাসাদের স্মৃতি সংরক্ষণে সক্রিয় হাইকোর্ট, এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৬ মার্চ ২০২৫
  • বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার তৈরি মুর্শিদাবাদের হীরাঝিল প্রাসাদ ও সংলগ্ন এলাকায় ঐতিহাসিক নিদর্শনের যতটুকুও অবশিষ্ট রয়েছে, সেটুকু যাতে অন্তত সংরক্ষণ করা যায়, সেই বিষয়ে এবার হস্তক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট।

    এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হয়েছে। আজ প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানিতেই আদালত নির্দেশ দেয় - মুর্শিদাবাদের হীরাঝিল প্রাসাদ ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করতে হবে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদলকে। সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিও থাকবেন। এবং তারপর সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে।

    আদালত সরাসরি রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছে - বর্তমানে মুর্শিদাবাদের হীরাঝিল প্রাসাদ ও সংলগ্ন এলাকা ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে? ওই ঐতিহাসিক প্রাসাদের এমন কোনও অংশ কি রয়েছে, যা সংরক্ষণ করা সম্ভব?

    এদিন ডিভিশন বেঞ্চের সংশ্লিষ্ট নির্দেশে আরও জানানো হয় - রাজ্যের তরফে যে পরিদর্শক দলটি হীরাঝিল প্রাসাদে যাবে, সেই দলের আহ্বায়ক হবেন মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক। তাঁর নেতৃত্বেই পরিদর্শনের কাজ সারতে হবে। সেই দলে আরও যাঁরা থাকবেন, তাঁরা হলেন - কেন্দ্র ও রাজ্যের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের একজন করে প্রতিনিধি এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধি।

    পরিদর্শক দলটিকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবে মামলাকারী ট্রাস্ট। কলকাতা হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, আগামী ছ'সপ্তাহের মধ্যে এই পরিদর্শক দলের পক্ষ থেকে আদালতে রিপোর্ট জমা করতে হবে। আদালত যে প্রশ্নগুলি তুলেছে, তার উত্তর পেশ করতে হবে।

    প্রসঙ্গত, সিরাজউদ্দৌলার তৈরি হীরাঝিল প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ করার আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলাটি একটি ট্রাস্টের পক্ষ থেকে রুজু করা হয়েছে। তাদের হয়ে উচ্চ আদালতে মামলাটি লড়ছেন প্রবীণ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

    আদালতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও হীরাঝিল প্রাসাদ ও তার সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ করার জন্য বর্তমান কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। তাই, আদালত এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করুক। আগের দিন, এই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের কী বক্তব্য রয়েছে এবং তাদের কী অবস্থান, তা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট।

    আজ, রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন, ১৭৫৮ সাল নাগাদ ওই প্রাসাদ ধ্বংস করে দেয় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। যার জেরে ব্রিটিশ শাসনকালের আগেই পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় হীরাঝিল প্রাসাদ। সেই ইতিহাসের আর কোনও চিহ্ন অবশিষ্ট নেই বলেও দাবি করেন রাজ্যে আইনজীবী।

    যা মানতে নারাজ মামলাকারী ট্রাস্ট। তাদের দাবি, বহু প্রাচীন ওই স্থাপত্যের কিছু অংশ এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। তার কিছুটা ইতিমধ্যেই ভাগীরথীর ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। বাকি যেটুকু রয়েছে, সেটুকু অন্তত বাঁচানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করুক রাজ্য সরকার।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)