জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিজেপি ভিনরাজ্যের ভোটার ঢোকাচ্ছে। এই অভিযোগ করে রাজ্যের ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ধরতে দলীয় নেতাকর্মীদের ময়দানে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বৃহস্পতিবার দলনেত্রীর সেই নির্দেশের পর অনেক লম্ফ ঝম্প করেছেন তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদরা। কিন্তু তার পরেও রাজ্যে ভোটার তালিকায় এখনও পর্যন্ত কত ভুয়ো ভোটার ধরা পড়েছে তার কোনও সংখ্যা বলতে পারল না তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, সংখ্যাটা হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ। বিরোধীরা প্রশ্ন করছে, তবে কি মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই ভুয়ো ভোটারের তত্ত্ব ছড়াচ্ছে তৃণমূল?
পড়তে থাকুন - 'স্কুলে ঝাঁট দিতে হয় পড়ুয়াদেরই', ‘তৃণমূল নেতা’ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে ছিল ভুয়ো ভোটার ধরতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া ৩৬ সদস্যের কমিটির প্রথম বৈঠক। বৈঠক শেষে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দিব্যেন্দু দাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। দলে ছিলেন সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ফিরহাদ বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্টভাবে দাবি করেছি যে যখন অনলাইনে কেউ আবেদন করবে তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ভেরিফিকেশন করতে হবে। বিএলও ও বিএলআরওর মাধ্যমে এই ভেরিফিকেশন করতে হবে। এছাড়া ইউনিক আইডি নম্বর ভারতের নির্বাচন কমিশনকে করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুসারে এটা নিশ্চিত করতে হবে।
আগে আমাদের ভোটার কার্ডে নির্দিষ্টভাবে কোন বিধানসভা ও কোন লোকসভা ভোটার সেটা সুনির্দিষ্ট ছিল। এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নতুন করে একটা করতে গিয়ে এটাকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে। যদি ইনকাম ট্যাক্সে, পাসপোর্টে, আধারে ইউনিক আইডি থাকে তাহলে কেন ভোটার আইডিতে ইউনিক আইডি থাকবে না? এটা আমাদের দাবি। নইলে আমারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।’
অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘একই নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ড রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নিরব কেন? এর পিছনে কী উদ্দেশ রয়েছে?’
এর পরই সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, কত ভুয়ো ভোটার এখনও চিহ্নিত করতে পেরেছে তৃণমূল। জবাবে ফিরহাদ বলেন, ‘আমরা সেই তথ্য পরিসংখ্যান কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছি। আগামীতে আরও দেব। সংখ্যাটা হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ। আমরা উদাহরণ হিসাবে কয়েকটা দিয়েছি।’
প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যে ভোটার তালিকায় ভুরি ভুরি ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ করে কেন সংখ্যা বলতে পারল না তৃণমূল? প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, রাজ্যে শিল্প নেই। শিক্ষা - স্বাস্থ্য রসাতলে গেছে। এসব থেকে নজর ঘোরাতেই ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ তুলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা তৈরির দায়িত্ব তো রাজ্যের আধিকারিকদের ওপর। তার পরও কী করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগ করতে পারেন?