• সংস্কারে বরাদ্দ ২৫ কোটি টাকা, তবু সল্টলেকের কিছু রাস্তায় ‘প্যাচওয়ার্ক’ই
    এই সময় | ০৭ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: পিচের উপর পিচের প্রলেপ দেওয়া চলবে না, খারাপ রাস্তার পিচ তুলে নতুন করে পিচ দিতে হবে—মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে এ কথা বলেছেন। কিন্তু তার পরেও বহু জায়গায় সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না, এমনটাই অভিযোগ। সেই তালিকার উপর দিকে রয়েছে বিধাননগর পুরনিগম এলাকা। সেখানকার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রায় তিন বছর ধরে সল্টলেকের রাস্তায় শুধু পিচের উপর পিচ, তার উপর পিচ এবং তার উপরেও আবার পড়ছে পিচের প্রলেপ। ফলে, বর্ষার পরে রাস্তার অবস্থা যে–কে–সেই।

    সম্প্রতি সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই ঘোষণার পরে এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই আশা করেছিলেন যে, এ বার অন্তত পিচের আস্তরণ তুলে ফেলে নতুন করে পিচ ঢালা হবে ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোয়। কিন্তু এ বারও বেশ কিছু জায়গায় সেই পুরোনো নিয়মেই রাস্তার মেরামতি হচ্ছে। ফলে, কত দিন ওই রাস্তা যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। পাশাপাশি, রাস্তার খারাপ অংশে পিচ না–তুলে ফেলে পিচের আস্তরণের উপরেই পিচ দেওয়ার ফলে সেই অংশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এতে বর্ষায় জল জমবে।

    সল্টলেকের বাসিন্দাদের অনেেকেরই বক্তব্য, এমন নয় যে, গোটা সল্টলেকেই রাস্তা বেহাল। কিন্তু কোথাও কোথাও পিচের প্রলেপ উঠে গিয়ে রাস্তায় এমন গর্ত ও খানাখন্দ তৈরি হয়েছে যে, তাতে উপনগরীর বাসিন্দারা যেমন নাস্তানাবুদ হচ্ছেন, তেমনই কর্মসূত্রে এবং অন্যান্য কাজে যাঁরা সল্টলেকে আসেন, তাঁরাও রীতিমতো ক্ষুব্ধ। বর্তমানে সল্টলেকের যে রাস্তাগুলোর অবস্থা সব চেয়ে খারাপ, সেগুলোর অন্যতম হলো, ৯ নম্বর জলাধার থেকে এসডিও অফিসে যাওয়ার রাস্তা, বৈশাখী আইল্যান্ড সংলগ্ন রাস্তা ও বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের পিছনের রাস্তা।

    তা ছাড়া, বৈশাখী বাজারের পর থেকে একে ব্লকের নতুন ব্রিজ, বিই ব্লকের ভিতরের একাধিক রাস্তা ও ২০৬ নম্বর ফুটব্রিজ, বিধাননগর পুর বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা, সেচ দপ্তরের আবাসনের উল্টো দিকের রাস্তা থেকে শুরু করে ইই ব্লকের সার্ভিস রোড, খালধার এবং ইই ব্লকের ভিতরের রাস্তার অবস্থাও একই রকম। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রাস্তার উপরের স্তরটি চেঁচে নতুন করে রাস্তা তৈরি করলে তাতে রাস্তা উঁচু হয় না। বরং, তাতে রাস্তা মজবুতও হয়। কিন্তু খরচ বাঁচানোর তাগিদে ঠিকাদাররা সে পথে হাঁটেন না, এমনটাই অভিযোগ।

    বিধাননগর পুরনিগমের মধ্যে সল্টলেক এলাকার ১৪টি ওয়ার্ডের রাস্তা সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। ঠিক হয়েছে, যে ঠিকাদার যে রাস্তা সারাবেন, সেই ঠিকাদারকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য সেই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে। কিন্তু সল্টলেক স্টেডিয়ামের ২ নম্বর গেটের সামনের রাস্তায় পিচ না–তুলে কেবলই প্যাচওয়ার্ক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    এ প্রসঙ্গে বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র ও পুরনিগমের পূর্ত বিভাগের দায়িত্বে থাকা অনিতা মণ্ডলের দাবি, ‘সব রাস্তা খুঁড়ে মেরামত করার প্রয়োজন নেই বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। যেখানে যেখানে প্রয়োজন, সেই রাস্তাগুলো খুঁড়ে মেরামত করা হবে।’ ডেপুটি মেয়রের বক্তব্য, শিগ্‌গিরি সল্টলেকের সব রাস্তার সংস্কার হবে।

  • Link to this news (এই সময়)