রাগের মাথায় নয়, ছক কষেই পিসিশাশুড়িকে খুন করেছিল ফাল্গুনী ঘোষ এবং তার মা আরতি ঘোষ। শাশুড়ি সুমিতার নিথর দেহ যখন বারান্দায় শোয়ানো সেই সময়ে তাঁর নামে সোনার গয়নার অর্ডার দেন মা ও মেয়ে? মধ্যমগ্রামের ঘটনায় পুলিশের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মধ্যমগ্রামে পিসিশাশুড়ি খুনের ঘটনায় চমকে উঠেছেন রাজ্যবাসী। মধ্যমগ্রামের দক্ষিণ বীরেশপল্লির ভাড়া বাড়িতেই পিসিশাশুড়িকে খুন করে বৌমা ফাল্গুনী, অভিযোগ এমনটাই। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে রবিবার পিসিশাশুড়ি সুমিতাকে খুন করে ফাল্গুনী এবং তার মা। সোমবার সুমিতার অসমে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। ট্রেনের সেই টিকিটও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের কথায়, সোমবার দিনটি কোনও মতে পার করতে চেয়েছিল মা ও মেয়ে। কারণ সেক্ষেত্রে সোমবার সুমিতা অসমে চলে গিয়েছে, এই তত্ত্ব খাড়া করতে কোনও অসুবিধা হতো না তাদের।
বৃহস্পতিবার ঘটনার পুনর্নির্মাণের পর আহিরিটোলা থেকে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ যায় বউবাজারের একটি সোনার দোকানে। সেখানেই খুনের পর সুমিতার গা থেকে খুলে নেওয়া সব গহনা বিক্রি করেছিল ফাল্গুনী এবং তার মা, সূত্রের খবর এমনটাই। সেই গয়না বিক্রি করে মা ও মেয়ে পেয়েছিল ৪২ হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়েই অন্য একটি দোকানে গিয়ে নতুন গয়নার অর্ডার দেয় ফাল্গুনী, যার দাম ছিল ২ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা। ওই গয়নার অর্ডার দেওয়া হয় সুমিতার নামেই। সুমিতার মোবাইল থেকে অনলাইনে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম জমা দিয়েছিল মা ও মেয়ে এবং বিলও হয় মৃত পিসিশাশুড়ির নামেই। তদন্তকারীদের কথায়, ওই বিল তৈরির সময়ও মৃত সুমিতা ঘোষের মৃতদেহ পড়েছিল মধ্যমগ্রামের ভাড়া বাড়িতে।
তদন্তকারীদের অনুমান, যেহেতু সুমিতার সোমবারই অসম চলে যাওয়ার কথা ছিল তাই কোনওমতে সেই দিনটা কাটিয়ে দেহ লোপাট করতে চেয়েছিল মা ও মেয়ে। যাতে পথেই কোনও অঘটন ঘটেছে সুমিতার সঙ্গে এই তত্ত্ব তারা খাড়া করতে পারে জোরালো ভাবে। অর্থাৎ, রাগের মাথায় বা কোনও ঝগড়ার মুহূর্তে খুন করা হয়নি সুমিতাকে। ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা মাফিক তাঁকে পৃথিবী থেকে সরানোর ছক কষা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।