প্রযুক্তি, লোকবলেও আয়ত্তে কাবু হলো না শুশুনিয়ার আগুন। অগ্নিগ্রাসে পাহাড়ের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল। আগুন নেভানোর জন্য রাতভর চেষ্টা করলেন বনকর্মীরা। চেষ্টা চলছে এখনও। কিন্তু শুক্রবার শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও নেভেনি শুশুনিয়ার আগুন।
বৃহস্পতিবার সকালে শুশুনিয়া পাহাড়ের পূর্ব অংশে প্রথম আগুন নজরে আসে। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাহাড়ের উপরের দিকে। খবর পাওয়ার পর থেকেই ব্লোয়ার নিয়ে পাহাড়ের বনাঞ্চলের আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা। আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য ব্লোয়ার দিয়ে ঝরা পাতার স্তূপ সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ক্রমাগত। কিন্তু, সন্ধ্যার পর থেকে পাহাড়ের উপরের অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার নেয়। ঝরা পাতার পাশাপাশি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে ছোট, বড় গাছও। রাতে আবার নতুন করে ৪০ জন বনকর্মীকে ব্লোয়ার নিয়ে আগুন নেভানোর কাজে নামানো হয়। পাহাড়ের আগুন নেভানোর উদ্দেশ্যে দমকলের একাধিক ইঞ্জিনও মোতায়েন করা হয়। কিন্তু, একদিকে পাহাড়ের একাংশের দুর্গম অবস্থা, অন্যদিকে আগুনের ভয়াবহতার কারণে কিছুতেই আগুন আয়ত্তে আনতে পারেননি বনকর্মীরা। আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে পাহাড়ের উপরে থাকা একাধিক গাছ। যদিও বন দপ্তরের তরফে দাবি করা হয়েছে, সে ভাবে ক্ষতি হয়নি কোনও বন্যপ্রাণীর।
কিন্তু কেন শুশুনিয়া পাহাড়ে লাগল আগুন? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও বলেন, ‘অনেক সময়ে জঙ্গলে বেড়াতে এসে কেউ কেউ বিড়ি বা সিগারেট খেয়ে তা না নিভিয়েই ফেলে দেয়। আবার কেউ কেউ পিকনিক করার পর ঠিকমতো আগুন নেভান না। এই সমস্ত কারণে আগুন ধরার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়।’ তবে বন্যপ্রাণীরা এ সমস্ত ক্ষেত্রে আগুন দেখে আগে থেকেই সেই জায়গা ছাড়েন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসেও আগুন লেগেছিল শুশুনিয়া পাহাড়ে। বহু সবুজ অকালে সেই সময় প্রাণ হারায়। ২০২২ সালের মার্চ মাসেও ঘটেছিল সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ২০২৪ সালে শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন লাগার স্মৃতিও ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। তিন থেকে চারদিন লেগেছিল আগুন আয়ত্তে আনতে। ২০২৫ সালেও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। শুশুনিয়া পাহাড়ের সবুজ সংশ্লিষ্ট এলাকার ‘ফুসফুস’। তা পুড়ে যাওয়া পরিবেশের জন্য অত্যন্ত বড় ক্ষতি বলে জানাচ্ছেন পরিবেশ কর্মীরা।