• দু’বছর পর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মিলল খাতা দেখার সাম্মানিক
    এই সময় | ০৭ মার্চ ২০২৫
  • সুমন ঘোষ, খড়্গপুর

    দীর্ঘ দু’বছর পরে খাতা দেখার সাম্মানিক পেলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজের শিক্ষকরা। আগে খাতা দেখার পরেই বরাবর হাতে হাতে সাম্মানিক মিলত। কোভিড পর্বের পর চিত্রটা হঠাৎ বদলে যায়। খাতা দেখার সাম্মানিক দু’বছর বকেয়া থাকায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। ‘এই সময়’–এ সেই খবর প্রকাশিত হয়। তার পরেই খাতা দেখার বকেয়া সাম্মানিক পেলেন শিক্ষকেরা।

    শুধু খাতা দেখার বকেয়া সাম্মানিক মিলল তা নয়, ভবিষ্যতেও যাতে এই সাম্মানিক আটকে না থাকে সে জন্যও পদক্ষেপ করলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বার থেকে নোডাল কলেজের মাধ্যমেই শিক্ষকদের খাতা দেখার সাম্মানিক দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

    এই নোডাল কলেজ কী?

    যে সমস্ত কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র হয়, সেই কলেজগুলিকে ‘নোডাল কলেজ’ বলা হয়। ওই সব কলেজের অধ্যক্ষদেরই দায়িত্ব নিয়ে খাতা দেখার ব্যবস্থা করতে হয়। খাতা দেখার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের কাছেই সাম্মানিক চেয়ে বিলও করতেন। কিন্তু কলেজের টাকা দেওয়ার এক্তিয়ার ছিল না। কলেজ কেবলমাত্র খাতা দেখা বাবদ বিল যথাযথ করা হয়েছে কিনা তা দেখে পাঠিয়ে দিত বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাম্মানিকের টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানোর কথা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেই টাকাই দু'বছর ধরে মিলছিল না।

    বেলদা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক তুহিন দাস বলেন, ‘এই সময়–এ খবরটা হয়েছিল বলেই দ্রুত বকেয়ার টাকা পেলাম। আমাদের তো একটাই দাবি ছিল, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে খাতা দেখার জন্য যদি পরীক্ষা ফি বাবদ টাকা নেওয়া হয়, তা হলে আমাদের তা দেওয়া হবে না কেন? এ বার নোডাল কলেজকেই টাকা দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আশা করি, এর পর আর অসুবিধে থাকবে না।’ বেলদা কলেজের অধ্যক্ষ চন্দ্রশেখর হাজরাও বলেন, ‘এ বার নোডাল কলেজগুলিকেই খাতা দেখার টাকা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

    এর পর খাতা দেখার সাম্মানিক দ্রুত মিলবে বলে শিক্ষকদের একাংশ আশাবাদী হলেও অন্য অংশটি কিন্তু এখনও সংশয়ী। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় যদি নোডাল কলেজগুলিকে সময়ে টাকা না দেয়, তখন কী হবে? সে ক্ষেত্রে তো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরিয়ে দায় ঝেড়ে ফেললে দায় পড়বে তো কলেজের ঘাড়ে।

    পাশাপাশি, সব নোডাল কলেজে কি উপযুক্ত কর্মী রয়েছেন? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। খড়্গপুর কলেজের অধ্যক্ষ বিদ্যুৎ সামন্ত বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের টাকা দিলে আমরাও দ্রুত সাম্মানিক দিতে পারব। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় টাকা দিতে দেরি করলে, আমাদের তো কিছু করার থাকবে না।’

    সবং কলেজের অধ্যক্ষ তপন দত্ত বলেন, ‘আমাদের কলেজে তো কর্মী কম। তার উপরে আরও দায়িত্ব বাড়ালে কলেজের চাপ বাড়বে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকুমার নন্দী বলেন, ‘যাতে শিক্ষকরা খাতা দেখার সাম্মানিক সহজে পান, নোডাল কলেজকে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলেজগুলিকে টাকা পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)