এই সময়, মেদিনীপুর: দিন কয়েক আগে বাজারে গিয়ে হারিয়ে যায় এক ব্যক্তির মোবাইল। সেই মোবাইলে রাখা তথ্য হাতিয়ে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সাইবার প্রতারকরা তুলে নেয় ৩ লক্ষ ১২১ টাকা! পুলিশে মোবাইল চুরির অভিযোগ জানালেও প্রায় মাস খানেক পরে ব্যাঙ্কের পাশবুক আপডেট করতে গিয়ে মাথায় হাত চন্দ্রকোণা রোড এলাকার ওই বাসিন্দার।
প্রতারিত ব্যক্তি ষষ্ঠীচরণ চৌধুরী পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-৩ ব্লকের বিডিও-র গাড়িচালক। চন্দ্রকোণা রোডের দুর্লভগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ষষ্ঠীচরণ জানান, পাশবুক আপডেট করতে গিয়ে তিনি খেয়াল করেন, দশ দিনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তিন লক্ষাধিক টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে।
এর পর গত বুধবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। বৃহস্পতিবার সাইবার ক্রাইম পোর্টালেও অভিযোগ জানান তিনি। পাশাপাশি, এ দিন ব্যাঙ্কে গিয়ে অ্যাকাউন্টের অবশিষ্ট টাকা তুলে নেন। তাঁর দাবি, তাঁর মোবাইলে কোনও টাকা মেটানোর কোনও অ্যাপ নেই। তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য ছিল। তাঁর দাবি, সম্ভবত সেই তথ্য কাজে লাগিয়েই ওই প্রতারণা ঘটনা ঘটেছে।
জানা গিয়েছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় হাটে আনাজ কিনতে গিয়েছিলেন ষষ্ঠীচরণ। সেখানে হারিয়ে যায় তাঁর স্মার্টফোনটি। এর পরে পুলিশের কাছে একটি জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করেন তিনি।
ষষ্ঠীচরণ বলেন, ‘আমি প্রায় কুড়ি বছর ধরে ব্লক অফিসের গাড়ি চালাচ্ছি। তিলে তিলে কিছু সঞ্চয় করেছিলাম। হাটে গিয়ে আমার ফোনটি হারিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার ফোন সুইচ অফ করে দেয় কেউ! ফোনে দু'টি সিমকার্ড ছিল। এর পরে একই নম্বরের সিমকার্ড পেতে পুলিশের কাছে জিডি করি। দশ–বারো দিন পর ওই নম্বরের সিমকার্ড বেরও করি। কিন্তু স্বপ্নেও ভাবিনি যে ফোন হারিয়ে যাওয়ার পরে আমার অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যাবে! আমার ফোনে কোনও টাকা মেটানোর অ্যাপ ছিল না। তবে ফোনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কিছু তথ্য ছিল। সম্ভবত সেটাকে কাজে লাগিয়ে এই প্রতারণা করে প্রতারকেরা। পুরো বিষয় পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। সাইবার ক্রাইম শাখায়, পোর্টালে অভিযোগও জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন ২৫ হাজার করে টাকা তোলা হয়েছে। ১০ দিনে ৭০ বারে মোট ৩ লক্ষ ১২১ টাকা খোয়া গিয়েছে আমার।’
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’ পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘সকলের কাছে আবেদন, নানা রকম ভাবে প্রতারণা হচ্ছে। প্রত্যেকে সচেতন থাকুন। কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। প্রতারণা হলে পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় রিপোর্ট করুন।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সাইবার প্রতারণায় খোয়া যাওয়া টাকার ৯৬ শতাংশ উদ্ধার করা গিয়েছে বলে জেলা পুলিশের দাবি।