• ছাব্বিশের আগে ‘দুয়োরানি’ শরণে বিজেপি, মুরলীধর সেনের দপ্তর সংস্কারের নির্দেশ, নেপথ্যে কোন কৌশল?
    প্রতিদিন | ০৭ মার্চ ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬, মুরলীধর সেন লেন থেকে জিএন-২৭, সেক্টর ফাইভ, সল্টলেক সিটি। বছর দুই আগেই সরকারিভাবে ঠিকানা বদলেছে বঙ্গ বিজেপি। বর্তমানে সল্টলেকের ঝাঁ-চকচকে আধুনিক অফিস, অত্যাধুনিক পরিকাঠামোর আড়ালে কার্যত বিস্মৃতির খাতায় দীর্ঘ দিনের সদর দপ্তর ৬, মুরলীধর সেন লেন। কিন্তু ছাব্বিশের ভোটের আগে সেই বাড়িটিই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শোনা যাচ্ছে, বিজেপির বঙ্গ নেতারা পুরনো ওই পার্টি অফিস সংস্কার করতে চাইছেন। ভোটের আগে সেখানে নতুন করে বাড়তে চলেছে সক্রিয়তা।

    এই মুহূর্তে বিজেপির সাংগঠনিক কাজকর্ম চলছে সল্টলেকের অফিস থেকে। দলের রাজ্য পদাধিকারীরা সেখানেই বসেন। কিন্তু ভোটের সময় সমান্তরাল একাধিক দপ্তর খোলে বিজেপি। যেমন ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে দৈনন্দিন কাজ হেষ্টিংসে চালাতে ঝাঁ চকচকে বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্লোর ভাড়া নিয়েছিল বিজেপি। যাবতীয় কাজ হচ্ছিল সেখান থেকেই। আবার ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত বা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির ‘ওয়ার রুম’ হয়ে উঠেছিল সেক্টর ফাইভের দপ্তর। এবারেও তেমন আলাদা আলাদা ভাবে সমান্তরাল অফিস খোলা হবে। বিজেপির সাংগঠনিক কাজ চলবে সেক্টর ফাইভের দ্দপ্তর থেকে। আর অন্যান্য কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে অন্য বাড়ি।

    এই সমান্তরাল কাজের জন্যই বাছা হয়েছে মুরলীধর সেন লেনকে। বিজেপি সূত্রের খবর, মুরলীধর সেন লেনের এই বাড়িতে কল সেন্টার খোলা হবে।গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির এই পুরনো রাজ্য দপ্তরের উপরের তলায় ‘কল সেন্টার’ খোলা হয়েছিল। ওই কল সেন্টার থেকে ভোটারদের সরাসরি ফোন করে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি সম্পর্কে তাঁদের মতামত নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দলের কর্মসূচি কোথায় সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে, সেটাও খোঁজ খবর নেওয়া হত ওই কলসেন্টার থেকে। এবারও তেমনটাই করা হবে।

    এমনিতে বাড়িটিতে মোটামুটি পরিকাঠামো রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন অব্যবহারের জন্য তাতে সংস্কারের প্রয়োজন। কোথাও ছাদ বেয়ে জল চোঁয়ানো। কোথাও ত্রিপল ঢাকা টিন, স্যাঁতসেঁতে দেওয়াল ঠিক করে ঝাঁ চকচকে করা হবে। তবে সেখানে ডেস্ক, চেয়ার, কিউবিকল এসবও রয়েছে। আপাতত যা শোনা যাচ্ছে, তাতে ওই কল সেন্টারের বাইরেও একাধিক কর্মসূচি হতে পারে ওই অফিস থেকে। আসলে এই মুরলীধর সেন লেনের বাড়িটিতে অফিস থাকাটা যাতায়াতের দিক থেকে বেশ সুবিধাজনক। হাওড়া এবং শিয়ালদহ দুই স্টেশন থেকেই কাছে। এসপ্লানেড কাছে। ফলে কর্মীদের যোগাযোগের সুবিধা হয়। এই সুবিধাজনক অবস্থানকে ব্যবহার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

    মুরলীধর সেন লেনের বাড়িটি নিয়ে বহু নস্ট্যালজিয়া রয়েছে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। ১৯২৫ সালে এই বাড়িটি ভাড়া নেয় জনসংঘ। তারপর জনতা পার্টি। ভাড়া বাড়ি হিসাবেই এই রাজ্য দপ্তর চলছে। সল্টলেকে পার্টি অফিস সরে যাওয়ার পর কার্যত দুয়োরানিতে পরিণত হয় মুরলীধর সেন লেন। ভোটের আগে সেই দুয়োরানিরই দ্বারস্থ হতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)