কালীঘাটের কাকুও ফেল? অযোগ্যদের চাকরি দিতে না পেরে জমি বিক্রি? ফিরিয়ে দেন টাকা?
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ মার্চ ২০২৫
অসংখ্য লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন লক্ষ-লক্ষ, সব মিলিয়ে অঙ্কটা পৌঁছে গিয়েছিল কোটি-কোটিতে। কিন্তু, তারপরও নাকি 'ফেল' করেছিলেন 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। বহু অযোগ্য প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েও তাঁদের চাকরি দিতে পারেননি তিনি। ফলত - ফেরত দিতে হয়েছিল টাকা! আর সেই টাকা তিনি ফেরত দিয়েছিলেন জমি বিক্রি করে!
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিবিআই যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে, তাতেই সামনে আসছে 'কাকু'র একের পর গুণকীর্তি! তার মধ্যেই এই জমি বিক্রির বিষয়টিও রয়েছে বলে দাবি সূত্রের।
সংবাদমাধ্যমে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, রীতিমতো 'প্রভাবশালী' সুজয়কৃষ্ণকে হঠাৎ করে জমি বিক্রি করতে হল কেন? এর নেপথ্য কারণ কি শুধুই চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখতে না পারা? নাকি, কোথাও না কোথাও কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের ভয়ও ছিল?
আগেই সামনে এসেছিল, একাধিক এজেন্ট ও সাব-এজেন্টের মাধ্যমে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন সুজয়। তাঁর এই এজেন্টদের মধ্যে অরুণকুমার হাজরা নামে এক বিজেপি নেতারও নাম জড়িয়েছে।
সিবিআই-এর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের একটি অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি চলাকালীন এমন একটা সময়ও এসেছিল, যখন একাধিক অযোগ্য প্রার্থী মোটা টাকা দিয়েও চাকরি পাচ্ছিলেন না।
তদন্তে উঠে এসেছে, চাকরি না পেয়ে ওই অযোগ্য প্রার্থীরা অরুণকুমার হাজরা-সহ বিভিন্ন এজেন্ট ও সাব-এজেন্টদের মাধ্যমে সুজয়কৃষ্ণের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন। তাঁদের দাবি ছিল, হয় কাঙ্ক্ষিত চাকরি তাঁদের পাইয়ে দিতে হবে। অথবা ফেরত দিতে হবে টাকা।
এই প্রেক্ষাপটেই বিক্রি হয়ে যায় বেহালার ম্যান্টনের ৩৭ কাঠার একটি জমি! যেটি কেনা হয়েছিল সুজয়কৃষ্ণের সংস্থা ও তাঁর পরিবারের নামে। সেই সময় ওই জমির বাজারদর ছিল ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। কিন্তু, জমির 'সেল ডিড'-এ ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দাম দেখানো হয়েছিল।
তদন্তকারীদের আরও বক্তব্য, মোটা টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ে রীতিমতো দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হত। সেই চুক্তিপত্র ইতিমধ্য়েই সামনে এসেছে। খুব সম্ভবত সেখানে চাকরি না পাওয়া গেলে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখিত ছিল। আর, সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্যই হয়তো 'কালীঘাটের কাকু'কে তাঁর সাধের জমি বিক্রি করতে হয়েছিল। তবে, সংশ্লিষ্ট একটি অংশ এর নেপথ্যে সিবিআই জুজুকেই কৃতিত্ব দিচ্ছে।
এই সংক্রান্ত যেসমস্ত নথি সিবিআই-এর হাতে এসেছে, তাতে এখনও পর্যন্ত ৭৮ কোটি টাকার লেনদেন সামনে এসেছে।