আট লাখে চাকরি? ম্যাজিক দেখিয়েছে সাদা খাতা, ভরসা ছিলেন কাকু, ডায়েরি পেয়েছে সিবিআই
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ মার্চ ২০২৫
খাতায় আঁচড় কাটা যাবে না। একেবারে সাদা খাতা। সেই সাদা খাতাই জমা দিতে হত চাকরির পরীক্ষায়। আসলে সবটাই হত আগাম বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। পরীক্ষায় পাশ করার জন্য় আসল জাদু দেখাত এই সাদা খাতাই। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় হওয়ার পরেই নির্দেশ আসত চাকরি পেতে গেলে জমা দিতে হবে সাদা খাতা। আর সেই সাদা খাতা আর মোটা অঙ্কের টাকা। এই দুইয়ের বিনিময়ে মিলত চাকরি। তবে যারা টাকা দিয়েছেন তারাই চাকরি পেয়েছেন এমনটা নয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে সব মিলিয়ে ১০টি ডায়েরি এসেছে। সেই ডায়েরিতেই রয়েছে এই টাকার হিসেব।
আসলে সেই ডায়েরিতেই রয়েছে ঘুষের হিসেব। কার কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে তার হিসেব রাখা আছে সেই ডায়েরিতে। বিভিন্ন এজেন্টদের মাধ্য়মে এই টাকা তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই চার্জশিটে চারজন এজেন্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘুষের টাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র সহ আরও একজনের কাছে যেত বলে অভিযোগ।
সব মিলিয়ে চারজন এজেন্টের কথা উল্লেখ করেছেন তদন্তকারীরা। তাদের কাছ থেকেই মিলেছে ১০টি ডায়েরি। সেই ডায়েরিতে রয়েছে ঘুষের টাকার হিসেব। কার কাছ থেকে কত টাকা তোলা হয়েছে তারই হিসেব রয়েছে এই ডায়েরির মধ্য়ে।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছে এই টাকা যাওয়ার আগে আরও একজনের কাছে সেটা হাতবদল হত। তারপর যেত কাকুর কাছে, এমনটাই অভিযোগ। আগের ওই ব্যক্তি সই করে প্রাপ্তি স্বীকার করতেন। মোটামুটি তিনটি জায়গায় এই টাকার হাতবদল হত। একেবারে নিখুঁত নেটওয়ার্ক। প্রথমে এজেন্ট মারফত চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা। তারপর সেই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বিশেষ নির্দেশিকা যে সাদা খাতা জমা দিতে হবে পরীক্ষার সময়। সেখানে কোথাও কিছু লেখা যাবে না। এরপর সেই বিপুল টাকা এজেন্টদের মাধ্য়মে প্রথমে যেত একজনের কাছে। এরপর সেখান থেকে কাকুর কাছে।
চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে সব মিলিয়ে ৭৮ কোটি টাকা ঘুষ হিসাবে তোলা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। ইতিমধ্য়েই চার এজেন্টের বয়ান নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। তবে টাকা যে তারা তুলেছেন তা তারা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে সেই এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য় পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। একাধিক চাকরিপ্রার্থীও আট লাখ টাকার বিনিময়ে উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে সকলেই যে চাকরি পেয়েছেন এমনটা নয়। তবে পরবর্তীকে সুজয়কৃষ্ণ কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।