অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কাটোয়া
দিনের অধিকাংশ সময় কাটে তাঁতযন্ত্রের সামনে বসেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক নাগাড়ে চলে শাড়ি বোনার কাজ। একঘেয়েমি কাটাতে গান শোনেন তাঁতি জগবন্ধু দালাল। অরিজিৎ সিংয়ের গানের কলি ভেসে আসে তাঁর কানে— হিন্দি ‘তুম হি হো’ হোক বা বাংলা ‘বোঝে না সে বোঝে না’— বার বার শুনতে থাকেন। একই সঙ্গে ক্রিকেটের ভক্ত জগবন্ধুর চোখে ভেসে ওঠে ক্রিকেট মাঠে এক বঙ্গসন্তানের স্কোয়ার ড্রাইভের দৃশ্য।
জগবন্ধুর শাড়িতে ফুটে ওঠে সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। দিন–রাত এক করে বানিয়ে ফেললেন তাঁর স্বপ্নের দুই শিল্পীকে নিয়ে শাড়ি। সুতো দিয়ে ফুটিয়ে তুললেন গিটার হাতে অরিজিৎ সিং আর জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি। জগবন্ধুর কথায়, ‘আমি ওঁদের ফ্যান। ভাবলাম, ভালোবাসা দিয়েই ওঁদের শাড়িতে ফুটিয়ে তুলি। সুযোগ পেলে উপহার দেবো ওঁদের।’
বছর ৩১–এর যুবক জগবন্ধু কাটোয়ার ঘোরানাশ গ্রামের তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা। বাবার কাছে ১৫ বছর বয়স থেকে তাঁতের কাজ শিখেছেন। আর প্রায় সাত মাস ধরে বোনা শাড়িতে ফুটে উঠছে প্রিন্স অফ ক্যালক্যাটার ছবি। শাড়ির মাঝে সৌরভের ছবির দু'পাশে তাঁর জীবনবৃত্তান্ত। কবে ক্যাপ্টেন হলেন, কোন ট্রফি জিতেছেন, কবে বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হলেন— যাবতীয় সব তথ্য রয়েছে এই শাড়িতে। জগবন্ধু নিজে খেলাধুলো করতেন। সেখান থেকেই সৌরভের প্রতি ভালোবাসা বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওয়াল পোট্রেটটি তৈরি করতে সময় লেগেছে মাসখানেক। অতীতে একই ভাবে শাড়িতে ফুটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি। সেই খবর প্রকাশিত হয়েছিল ‘এই সময়’ পত্রিকায়। পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে ওই শাড়ি তাঁকে উপহার দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন জগবন্ধু।