সদ্যোজাত ও তার পরিবারের কোনও সঠিক নথি জমা হয়নি। অথচ পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হয়েছে একের পর এক জন্ম শংসাপত্র। তাও, একটি-দুটি নয়, প্রায় ১১০০টি শংসাপত্র ইস্যু করা হয়েছে। অডিট হওয়ার সময়েই ধরা পড়ে কারচুপি। পলাতক অভিযুক্ত পঞ্চায়েত কর্মী আশিস কর্মকার। ঘটনা নদিয়ার চাপড়ার হৃদয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে।
গত দুই বছরে প্রায় ১১০০ শিশু শুধুমাত্র একটা পঞ্চায়েত এলাকায় জন্ম নিয়েছে, বিষয়টি সামনে আসতেই শুরু হয় ধোঁয়াশা। শংসাপত্রগুলির মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশুগুলি হাসপাতালে না জন্মে অন্যত্র অথবা ভিন রাজ্যে জন্মেছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অডিট হওয়ার সময় এই বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধানের নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েত কর্মীকে শোকজ় করা হয়। বিষয়টি নজরে আসতেই গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত কর্মী।
পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি বিবি জানান, পঞ্চায়েত প্রধানের মোবাইল নম্বর দিয়ে যে পদ্ধতিতে লগ ইন করতে সেখানেও জালিয়াতি করা হয়েছে। শুধু চাপড়া নয়, এখানে ভিন রাজ্যের মানুষের জন্মের শংসাপত্র দেওয়ারও প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি পঞ্চায়েত প্রধানের। ইতিমধ্যে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান।
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকওয়ানা মিতকুমার জানিয়েছেন, চাপড়া থানায় এক পঞ্চায়েত কর্মী আশিস কর্মকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। ওঁর বিরুদ্ধে নকল সার্টিফিকেট ইস্যু করার অভিযোগ রয়েছে। ৩১৮, ৩৩৬, ৩৪০,৩৪১বি ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
বিষয়টি নিয়ে বিজেপি নেতা সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে শুধু পঞ্চায়েত কর্মী নন, আরও বড় মাথা জড়িত আছে। হৃদয়পুর সীমান্তবর্তী এলাকার পাশেই বাংলাদেশ, তাই আগামী দিন যাতে ভোটার লিস্টে নাম তুলতে পারে এটা তার কৌশল।’ পাল্টা চাপড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি শুকদেব ব্রহ্ম বলেন, ‘ওঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কাদা ছুড়ছে, অথচ ক’দিন আগেই বগুলায় বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে নকল জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হয়েছে। ওদের মুখে এ সব মানায় না।’