‘কথায় বলে জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা’, এক কালের মুদ্রা জমানোর শখ এখন অবসরপ্রাপ্ত জীবনে পেট চালানোর মাধ্যম। শখের বশে জমিয়ে রাখতেন বিভিন্ন দেশের-সহ নিজের দেশেরও বিভিন্ন মূল্যের, বিভিন্ন সময়ের দুষ্প্রাপ্য নোট ও কয়েন। রিটায়ারমেন্টের পর সেই বিরল সব সংগ্রহ ভালো দামে আগ্রহীদের কাছে বিক্রি করেন হুগলির শ্রীরামপুরের অমল ভট্টাচার্য।
শ্রীরামপুরের বাসিন্দা অমলবাবু চাকরি করতেন পোস্ট অফিসে। কুড়ি বছর বয়স থেকে পুরাতন ও বিভিন্ন দেশীয় মুদ্রা সঞ্চয় করার শখ ছিল তাঁর। মুদ্রা সংগ্রাহক অমল ভট্টাচার্যর সংগ্রহও ঈর্ষনীয়। ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া শেষ মুদ্রা থেকে স্বাধীন ভারতের প্রথম মুদ্রা, দশ টাকার প্রথম নোট, জওহরলাল নেহেরুর ছবি দেওয়া পয়সা থেকে ৯০ দশকের বিভিন্ন ডিজাইনের এক টাকা, সবই আছে তাঁর বাড়িতে। ষাট বছরে রিটায়ার করে শখের সঞ্চয় করা পয়সা বিক্রি করেই দিন যাপন করছেন বৃদ্ধ।
হুগলির শ্রীরামপুরের জি টি রোডের উপরে বটগাছের তলায় প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত পাওয়া যাবে মুদ্রা দোকানি অমল ভট্টাচার্যকে। তিনি বলেন, বছর দু’য়েক ধরে তিনি রাস্তার ধারেই বসে বিক্রি করছেন তাঁর সঞ্চয়ের বিভিন্ন মুদ্রা। আগে তাঁর কাছে আরও বেশি সঞ্চয় ছিল বিগত দুই বছরে তা বেশ কিছু বিক্রি হয়েছে। তারই মুদ্রার সঞ্চয় দেখতে প্রতিদিনই বহু মানুষ আসেন। তবে যাঁরা পুরাতন মুদ্রা জমানোর শখ রাখেন, তারাই এসে এই দুর্লভ পয়সা কিনে নিয়ে যান।
অমলবাবুর এই দোকানের খবর মুদ্রা সংগ্রহকারীদের মুখে মুখে ছড়িয়েছে। হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ আসেন তাঁর কাছে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য মুদ্রার খোঁজে। বাংলাদেশ থেকেও অনেকে এসে মুদ্রা নিয়ে যান তাংর থেকে বলে জানালেন অমলবাবু। তাঁর ছোটবেলার এক শখ এখন জীবনধারণের উপায়।