বিরল রোগে আক্রান্ত হাতি, থাইল্যান্ড থেকে এল চিকিৎসকের দল
আজকাল | ০৮ মার্চ ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাগডোগরার জঙ্গলে ট্রাইপ্যানোসোমা প্রোটোজোয়া নামের মারণরোগে আক্রান্ত হাতিশাবক। তারই চিকিৎসায় থাইল্যান্ড থেকে এল চিকিৎসকের বিশেষ দল। হাতিটিকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে বনদপ্তর। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাগডোগরা বনাঞ্চল লাগোয়া সেনা ছাউনিতে ৬বছর বয়সী একটি স্ত্রী হাতিকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে বনদপ্তরে খবর দেয় সেনা কর্মীরা। এরপর বন বিভাগের চিকিৎসক হাতিটির চিকিৎসা শুরু করেন। জানা গিয়েছে, পিছনের একটি পা ফুলে যাওয়ায় হাতিটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিল। চিকিৎসা চলাকালীন হাতিটির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়।
আর সেই রিপোর্ট আসা মাত্রই চমকে ওঠেন বনদপ্তর। সেই রিপোর্টে উঠে আসে ট্রাইপ্যানোসোমা প্রোটোজোয়া নামক একটি বিরল রোগ। যা হাতি থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হলে হাতির শরীরে রক্তকণিকা ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। নরম হয়ে যায় হাতির শরীরের হাড়। হাতিটিকে বর্তমানে বাগডোগরা রেঞ্জের টাইপু বিটে রাখা হয়েছে। এদিকে বনদপ্তরের হয়ে কাজ করা জাম্বো ট্রুপস নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থাইল্যান্ডের একটি বিশেষ পশু চিকিৎসালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে থাইল্যান্ড থেকে পাঠানো হয়েছে চারজনের বিশিষ্ট চিকিৎসকের দল। বর্তমানে বনদপ্তরের চিকিৎসকদের সঙ্গেই হাতিটির চিকিৎসা করছেন তারা। জঙ্গলে ঢুকে পড়া গবাদি পশু থেকে এই সংক্রমণ হাতিটির শরীরে ছড়াতে পারে বলে অভিযোগ।
এরপরেই শুক্রবার বাগডোগরা বনাঞ্চলের সেন্ট্রাল ফরেস্ট বস্তি, ডহরা বস্তি ও এমএম তরাইয়ের গবাদি পশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই ভাইরাস বন্য জীবজন্তু থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। গবাদি পশুদের থেকে যাতে এই সংক্রমণ না ছড়িয়ে যায় সে কারণে বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকার গবাদিপশুর ওপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বনদপ্তর। এই বিষয়ে বনদপ্তরের কার্শিয়াং ডিভিশনের ডিএফও দেবেশ পান্ডে বলেন, ‘জঙ্গল এলাকার গবাদি পশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। হাতিটি যাতে উন্নত মানের চিকিৎসা পায় সে কারণে টাইপু বিটে আনা হয়েছে’। তাঁরা আশাবাদী হাতিটি সুস্থ হয়ে উঠবে। সে কারণেই হাতিশাবকটির নাম দেওয়া হয়েছে হোপ অর্থাৎ আশা। এলাকার গবাদি পশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও রিপোর্ট পাওয়া যাবে ১০ দিন পর। ততক্ষণ পর্যন্ত হাতিশাবকটি ও অন্যান্য জীবজন্তুর ওপরও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বনদপ্তর।