মৃত্যুর তিন মাস পর মামলাকারীর মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে, বিস্মিত বিচারপতি
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ মার্চ ২০২৫
কলকাতা হাইকোর্টে একটা অদ্ভূত ঘটনা ঘটেছে। একটি মামলা হয়েছে। আর যিনি মামলা করেছেন তিনি তিন মাস আগে মারা গিয়েছেন। তাহলে তিন মাস পর তিনি মামলা করলেন কেমন করে? উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কি মামলার সঙ্গে ভূতের যোগ রয়েছে? এমন প্রশ্ন তুলে অনেকে হাসছেন। এই ঘটনা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ন্যায্য পেনশন তিনি পাননি বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগ তুলে তাঁর ন্যায্য প্রাপ্তির আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক শিক্ষক। তবে সরকারি নথি থেকে জানা যাচ্ছে, মৃত্যুর প্রায় তিন মাস পরে ওই শিক্ষক মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টে।
এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারছেন না। এই মামলার শুনানি চলাকালীন এই কথা সামনে আসতেই চলতি সপ্তাহেই বাকরুদ্ধ হয়ে যান বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তারপর সব কথা শুনে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, কলকাতা হাইকোর্টের সঙ্গে জালিয়াতি করা হয়েছে। এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্ট যথাযথ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিতে পারত। তবে মামলাকারীর পক্ষ ওই মামলা খারিজ করার আর্জি জানানো হয়েছে বলে অবশেষে তিনি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেননি। বরং ওই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন রাজাশেখর মান্থা। এমনকী এই মামলায় আগে মামলাকারীকে পেনশন নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সেটাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, এক স্কুলশিক্ষক ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। ওই বছরেরই ১৩ ডিসেম্বর ন্যায্য পেনশন দেওয়া নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশ দেন বিচারপতি। তারপর সেটা নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য হয়নি। এবার চলতি সপ্তাহেই সংশ্লিষ্ট মামলাটি আবার ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। তাতে রাজ্য সরকার সরাসরি আদালতকে জানিয়ে দেয়, ওই নির্দেশ পালন করার জন্য খোঁজখবর করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই মামলা দায়েরের আগেই মামলাকারী মারা গিয়েছেন। তাহলে মামলা দায়ের করলেন কে? বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রায়ে উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের হয়েছে। অথচ মামলাকারী ওই বছরের ১৮ জুন মারা গিয়েছেন।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ এমন ভুলভ্রান্তি তখনই হয় যখন মামলা দায়ের ঠিকঠাক করা হয় না। আইনজীবীদের মতে, কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে গেলে নানা নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই নিয়ম ঠিক মতো পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার ঘটনা সেই সাক্ষ্য বহন করছে। এমনিতে কলকাতা হাইকোর্টে কোনও মামলা করলে তা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে অনেকের। তার মধ্যে আবার এমন ঘটনা ঘটলে আদালতের সময় নষ্ট হয়। এটাই এখন চর্চিত হচ্ছে।