সুমন করাতি, হুগলি: বাংলার মেয়ের হাতের কাজ এবার পৌঁছে গেল চাঁদে। তাঁর ডিজাইন করা পোশাক উঠেছিল ব্রিটেনের রানির গায়ে। সেই অনিন্দ্যসুন্দর ‘ইটারনাল রোজ’ থিমের লাল টুকটুকে গাউন পরেই রাজা চার্লসের সঙ্গে রাজ্যাভিষেকে হাজির হয়েছিলেন একদা ‘ডাচেস অফ কর্নওয়াল’ ক্যামিলা পার্কার বোলস। পোশাকের ডিজাইন রানির এতই পছন্দ হয়েছিল যে, তিনি বারবার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন। সেই ডিজাইনার হুগলির দাদপুর থানার প্রত্যন্ত বাদিনান গ্রামের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মল্লিকের সাফল্যের মুকুটে আরও এক নতুন পালক।
এবার নাসার সহযোগিতায় ফায়ারফ্লাই এরোস্পেস সংস্থার চন্দ্রযান ‘ব্লু ঘোস্ট লুনার ল্যান্ডার’-এর লাইফশিপ পিরামিডে অন্তর্ভুক্ত হল তাঁর তৈরি করা রাজা চার্লসের বাটারফ্লাই ডিজাইনের কসমিক ব্রোচ ও রানির গোলাপ-গাউনের দুটি ডিজাইন। বিশ্বে এই প্রথম কোনও ফ্যাশন ডিজাইনারের তৈরি নকশা পৌঁছে গেল চাঁদের মাটিতে। যা এককথায় নজির।
ইতালির মিলান থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের প্রথাগত ডিগ্রি নেওয়ার পরই পুরোদস্তুর কাজ শুরু করেন প্রিয়াঙ্কা। ততদিনে তাঁর বেশ কিছু ডিজাইন প্রশংসিত হতে শুরু করেছে। তবে, ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ২০২৩ সালে ব্রিটেনের রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেকের সময়। নাসার চন্দ্রযানে তাঁর তৈরি ডিজাইন অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় যারপরনাই খুশি তিনি। চন্দ্রযান গত ২ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় সময় রাত দুটো নাগাদ চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে। ১৫ জানুয়ারি মিশন শুরুর পরই ‘ইউনিভার্সাল ফ্যাশন ডিজাইনার’-এর স্বীকৃতি পান প্রিয়াঙ্কা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত প্রিয়াঙ্কা মল্লিক।
শুভেচ্ছাবার্তাও ই-মেল মারফত এসে পৌঁছেছে প্রিয়াঙ্কার কাছে। প্রিয়াঙ্কা বলেন, “এই ডিজাইনগুলো আমি ভারচুয়ালি কোম্পানিকে পাঠাই। তারা জানায় এটা লাইফশিপ পিরামিড-এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যেটা হাজার হাজার বছর অবধি চাঁদের মাটিতে রয়ে যাবে। এটা মানব সংস্কৃতি, মানব সমাজের ফ্যাশনকে সারা ব্রহ্মাণ্ডে ছড়িয়ে দেবে। আমি কতটা খুশি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এমন একটা স্বপ্ন সফল হল, যেটা আমি জীবনে কল্পনাও করতে পারিনি।” পাড়ার মেয়ের এহেন সাফল্যে গর্বিত প্রিয়াঙ্কার প্রতিবেশীরাও।