হাওড়ার পোড়া মঙ্গলাহাটে হবে ৬ তলা মার্কেট কমপ্লেক্স, শীঘ্রই শুরু নির্মাণ
প্রতিদিন | ০৮ মার্চ ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার, হাওড়া: আইনি জটিলতা কাটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পোড়া মঙ্গলাহাটের বস্ত্র ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দিতে পোড়াহাটে ৬ তলা মার্কেট কমপ্লেক্স করতে চলেছে হাওড়া জেলা প্রশাসন। আগামী এক মাসের মধ্যেই এই মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যেই ওই জমিতে রাজ্য সরকারের তরফে জমির মালিকানার বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২০ জুলাই রাতে হাওড়া ময়দানে মঙ্গলাহাটের একাংশ পুড়ে গিয়েছিল। হাটের কয়েক হাজার স্টল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হন হাটের ওই অংশের প্রায় ৭ হাজার স্টল মালিক। পরদিন ২১ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পোড়া হাট পরিদর্শন করতে ছুটে আসেন হাওড়ায়। তারপরই সরকারের তরফে ব্যবসায়ীদের সেখানে অস্থায়ী স্টল করে দেওয়া হয়। এতদিন অস্থায়ী স্টলেই ব্যবসা করছিলেন হাটের ব্যবসায়ীরা।
সেদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, “যদি দেখি যেখানে স্টল পুড়ে গিয়েছে সেই জমি আমাদের অধীনে তাহলে ওখানে আমরা বিল্ডিং বানিয়ে দিতে পারি। আর যদি দেখা যায় জমি কারও নামে নেই, লিজে রয়েছে তাহলেও আমরা জমিটা নিয়ে নিতে পারি। তার পর ওই জমিতে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দিতে পারি।” মুখ্যমন্ত্রীর সেদিনের নির্দেশ পাওয়ার পরই জেলা প্রশাসন ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দিতে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু জমি নিয়ে আদালতে কিছু মামলা চলায় আইনি জটিলতায় মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজ এতদিন আটকে ছিল।
জেলা প্রশাসনের দাবি, অবশেষে আইনি জটিলতা কেটে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজ এবার খুব শীঘ্রই শুরু হবে। জেলা প্রশাসনের দাবি, ওই জমি রাজ্য সরকারের। তাই ওখানে পোড়া হাটের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জায়গা দেওয়া হবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের আলোচনাও হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করতে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর ও কেএমডিএ ওই এলাকার মাটি পরীক্ষা করে গিয়েছে। মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজটি করবে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। ওই ২.৬ একর জমিতে ডিপিআর তৈরির পাশাপাশি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
এই প্রসঙ্গে হাওড়ার জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া বললেন, “অনেকদিন আগেই পোড়া মঙ্গলাহাটে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে। ডিপিআর হয়ে গেলে এক মাসের মধ্যেই ওখানে কাজ শুরু হবে। তাই ব্যবসায়ীদের বিষয়টি নজরে আনতে হাটের ভিতরে দু’টি বোর্ড লাগানো হয়েছে। তবে কাজ চলার সময় পাশে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার ব্যবস্থা করে তার পর কাজ হবে যাতে ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কোনও ক্ষতি না হয়।” এদিকে বাবুলাল লস্কর নামে এক ব্যক্তি শুক্রবার দাবি করলেন, যেখানে পোড়াহাট রয়েছে সেই জমি তাঁর। তাঁর নামে হাওড়া পুরসভায় মিউটেশন রয়েছে।
তাহলে সেক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে কথা না বলে কীভাবে সরকার ওই জমিতে মার্কেট কমপ্লেক্স করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। যদিও হাওড়ার মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতি সেন্ট্রাল-এর সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার সাহা বললেন, “জমি কার তা আমাদের জানার দরকার নেই। হাটের ব্যবসায়ীরা চান পোড়াহাটে সঠিক পুনর্বাসন পেয়ে আবার আগের মতোই ব্যবসা করতে। হাট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা যেন বন্ধ না হয়।”