• কুপন ছাপিয়ে চাঁদা তুলছে পানিহাটি পুরসভা, বিতর্ক
    এই সময় | ০৮ মার্চ ২০২৫
  • অশীন বিশ্বাস, পানিহাটি

    অমরাবতী মাঠ নিয়ে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। ৮৫ বিঘার ওই বিশাল মাঠ বিক্রির বিষয়টি যে পানিহাটি পুরসভা আগে থেকেই জানত, তা ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে পুরসভার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানের খরচ জোগাতে শহরবাসীর থেকে একপ্রকার জোর করে কুপন কেটে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠল পানিহাটি পুরসভার বিরুদ্ধে! যা নিয়ে ফের পানিহাটি পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

    ১৯০০ সালের পয়লা এপ্রিল পথচলা শুরু হয়েছিল পানিহাটি পুরসভার। পুরসভার ১২৫ বছরে প্রাপ্তির থেকেও এখন পুরসভাকে ঘিরে মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। সে জঞ্জাল সমস্যা হোক বা রাস্তাঘাটের জরাজীর্ণ দশা কিংবা পানীয় জল বা নিকাশি নালার বেহাল অবস্থা, সব ক্ষেত্রেই প্রশ্নের মুখে পানিহাটি পুরসভার ভূমিকা।

    যার নবতম সংযোজন পানিহাটির ফুসফুস অমরাবতী মাঠ বিক্রির জল্পনা। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যেতেই ওই চক্রান্ত তিনি রুখে দিয়েছেন। অব্যবহৃত পড়ে থাকা মাঠটি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্তের পরিকল্পনা সরকারি স্তরে নেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।

    কিন্তু তাতেও যেন কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই! পুরসভা আছে পুরসভাতেই। এ বার পানিহাটি পুরসভার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার জন্য রীতিমতো কুপন ছাপিয়ে শহরবাসীর কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে টাকা নেওয়ার যে বিল দেওয়া হচ্ছে, তাতে কোনও তারিখ ও বিল সংগ্রাহকের স্বাক্ষর তো দূরের কথা, পুরপ্রধান বা উৎসব কমিটির কারও কোনও সই নেই।

    শুধুমাত্র যিনি চাঁদা দিচ্ছেন তাঁর নাম, টাকার পরিমাণ এবং বিল নম্বর লেখা থাকছে তাতে। অভিযোগ, পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট বিভাগে মিউটেশনের জন্য যাওয়া শহরবাসীর থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে এক হাজার টাকা করে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।

    হয়রানির ভয়ে অনেকে টাকা দিতে বাধ্য হলেও, তারা পুরসভার এমন কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাদের প্রশ্ন, পুরসভা কি আদৌ এ রকম কুপন ছাপিয়ে টাকা আদায় করতে পারে সাধারণ মানুষের থেকে?

    পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক কাউন্সিলারের বিষয়টি অজানা। এমনকি বোর্ড মিটিংয়েও এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে অভিযোগ। কুপন ছাপিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে পুরপ্রধান মলয় রায় বলেন, ‘জোর করে কারও থেকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে না। যারা ইচ্ছুক শুধুমাত্র তাদের থেকেই চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। সব বিলে সই না থাকলেও কাউন্টার পার্টে সই থাকছে। স্বাক্ষরবিহীন বিল নিয়ে পুরসভায় এলে সই করে দেওয়া হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)