ফের দম্পতির রহস্যমৃত্যু। এ বার ঘটনাস্থল আসানসোলের কুলটি। মৃতদের নাম রূপকুমার বাউরি (৪০) ও মালা বাউরি (৩৫)। শনিবার সকালে বাড়ি থেকেই তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়। রূপকুমারের ঝুলন্ত দেহের পাশেই পড়েছিল মালার নলি কাটা দেহ। এই ঘটনার নেপথ্যে এক দিকে যেমন পারিবারিক অশান্তির অভিযোগ উঠছে, তেমনই উঠে আসছে ধারদেনার তত্ত্বও।
এলাকার লোকজন জানান, শুক্রবার কুলটির আলডি গ্রামে একটি বিয়ে বাড়ি ছিল। বিকেল থেকেই ডিজে বাজছিল। অনেক রাত অবধি গানবাজনা চলে। সেই বিয়েবাড়িতে নিমন্ত্রণ ছিল বাউরি পরিবারের অনেকেরই। রূপকুমার, মালা সেখানে যাননি বলেই খবর। তবে তাঁদের মেয়েরা গিয়েছিল।
রাতে তারা ফিরে এসে নিজেদের ঘরে শুয়ে পড়ে। পাশের ঘরে বাবা, মা ছিল। এর পর শনিবার সকালে উঠে দেখে এই ঘটনা। রূপকুমার গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন, মেঝেতে পড়ে আছেন মালা, তাঁর গলার নলি কাটা। পরিবারের লোকজনের অনুমান, স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হন স্বামী। প্রথমে স্ত্রীর গলার নলি কাটেন, পরে নিজে আত্মঘাতী হন বলে মনে করা হচ্ছে।
এলাকার লোকজন জানান, রূপকুমার পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। কখনও কখনও গাড়িও চালাতেন। মালা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তাঁদের চার মেয়ে। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ঘটনার সময় পাশের ঘরে শুয়েছিল তিন কিশোরী মেয়ে। কিন্তু রাতে তারা কোনও আওয়াজ পায়নি বলেই জানায়।
মালার ভাই শিবদাস বাউরি জানান, জামাইবাবুর অনেক জায়গায় ধার হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে দিদি-জামাইবাবুর অশান্তিও লেগেই থাকত। শনিবার ভাগ্নি ফোন করে জানায়, এই ঘটনার কথা। মালার ভাই জানান, লোনের টাকা নিতে প্রায়ই বাড়িতে লোকজন আসত। এ নিয়ে অশান্তিও হতো। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে আসানসোল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে রয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর হরিদাস বাউরি। তিনি বলেন, ‘ওদের লোন নিয়ে একটা ঝামেলা অনেক দিনধরে চলছিল। অশান্তিও হতো প্রায়ই। আমরা সকলে বুঝিয়েছি ওদের। প্রায়ই ঝামেলা হতো, আমরা তা মিটিয়েও দিতাম। কিন্তু এমনটা হবে ভাবতে পারিনি।’ কিছু দিন আগেই কলকাতার কসবার হালতুতে দেনার দায়ে এক দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ছায়া এ বার কুলটিতে।