• 'আড়াই লক্ষের চেয়ে আড়াইশোর স্বার্থ বড় নয়'! তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প নিয়ে মন্তব্য আদালতের...
    ২৪ ঘন্টা | ০৮ মার্চ ২০২৫
  • দিব্যেন্দু সরকার: 'দিঘি বাঁচিয়ে রেল চাই' বলছেন ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীরা। তবে 'আড়াই লক্ষের চেয়ে আড়াইশোর স্বার্থ বড় নয়'-- তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প নিয়ে এমনই মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের। দীর্ঘ ৮ বছর 'ভাবাদিঘি বাঁচাও' জমি আন্দোলনে থমকে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প। শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরাও অনড়।

    কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নতুন করে আশার আলো দেখছে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প। তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের গোঘাট ও কামারপুকুরের মধ্যবর্তী ভাবাদিঘি-জটে থমকে রেলের কাজ। তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের ভাবাদিঘি অংশের কাজ আগামী তিন মাসের মধ্য শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি.এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণবাবদ যেখানে ক্ষতিপূরণ ইতিমধ্যে দেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেই অঞ্চলের কাজ ৬ সপ্তাহের মধ্যে শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে রেল কর্তৃপক্ষকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে ও জমি অধিগ্রহণের সমস্যা মেটাতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

    ভাবা দিঘির আন্দোলনকারীরা কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেও তাঁদের দাবি থেকে এখনও সরে আসেননি। ভাবা দিঘি বাঁচাও আন্দোলনকারীদের দাবি, দিঘি বাঁচিয়ে রেলপথ হোক। তাঁরা রেল লাইনের পক্ষে। যদিও হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের পরে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল লাইন নিয়ে আশার আলো দেখছেন দক্ষিণবঙ্গের বৃহৎ অংশের মানুষজন। এই রেললাইন সম্পূর্ণভাবে চালু হলে পশ্চিমাঞ্চলের বাঁকুড়া,পুরুলিয়ার সঙ্গে হাওড়ার যোগাযোগ করতে আরও কম সময় লাগবে।

    তারকেশ্বর বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই জোর কদমে চলছে। তারকেশ্বর-আরামবাগ থেকে গোঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়ে রেল চলছে। অন্য দিকে, কামারপুকুর স্টেশনও তৈরি হয়ে পড়ে আছে। গোঘাট রেলস্টেশন থেকে ভাবা দিঘির পূর্ব পাড় পর্যন্ত রেলের স্লিপার ও লাইনের পাত পড়েছে। ভাবা দিঘির পশ্চিমপ্রান্ত থেকে কামারপুকুর স্টেশন পর্যন্ত স্লিপার বিছিয়ে রেললাইন সম্পূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। কামারপুকুর স্টেশনও আগেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে জোরকদমে রেল লাইনের ও স্টেশনের কাজ চলছে। কামারপুকুর রেলস্টেশন থেকে জয়রামবাটি রেলস্টেশন মধ্যবর্তী অমরপুর এলাকায় দ্রুতগতিতে মাটি ফেলার কাজ চলছে।

    উল্লেখ্য, ভাবা দিঘিতে রেললাইনের মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকেই আন্দোলন শুরু হয়। অভিযোগ ছিল, শাসকদলের লোকজন স্থানীয় পার্টি অফিস থেকে মদত দিয়ে জোর করে মাটি ফেলে এই দিঘি বুজিয়ে ফেলছেন। এর পরেই ভাবা দিঘির গ্রামবাসীরা তৃণমূল পার্টি অফিসে হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় পার্টি অফিস। পুড়িয়ে দেওয়া হয় তৃণমূল নেতাদের বাইক। সেই সময় গ্রামের মহিলারাও একত্রিত হয়ে তৃণমূল নেতাদের গণধোলাই দেন। এলাকা উত্তপ্ত হয়ে থাকে দীর্ঘদিন। এলাকায় পুলিস পিকেট বসানো হয়, যা আজও বিদ্যমান। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য 'সেভ ডেমোক্রেসি টিম' নিয়ে ভাবা দিঘি আসার পথে শাসকদল রাস্তায় ফেলে মারধর করে বিকাশবাবুকে। সেফ ডেমোক্রেসি টিমের অন্যান্য সদস্যরাও ভাবা দিঘি আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েন। হাইকোর্টে মামলা চলে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)