যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলার ঘটনায় এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। ইতিমধ্যেই সিপিএম নেতা সৃজন ভট্টাচার্যকে আজ শনিবার যাদবপুর থানা তলব করেছে। এই হামলার ঘটনায় সাংসদ সায়নী ঘোষ থেকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস প্রত্যেকেই বাম–অতিবাম সকলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর সেটা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। সুর চড়িয়েছেন কামারহাটির বিধায়ক। তবে এবার মদন মিত্রের গলায় ছিল হুঁশিয়ারির সুর। আর তা নিয়েই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এক ছাত্রও আহত হন শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কাণ্ডের পর উপাচার্যদের নিয়ে রাজভবনে বৈঠকে বসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই নিয়ে মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপস্থিতিতে ওয়েবকুপার সভায় ঢুকে ভাঙচুর করা, গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া, পাইলট কার ভাঙচুর, গালমন্দ করা এবং শেষে নিগ্রহ করার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। তার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ব্রাত্য বসু। তাঁর গাড়ির ধাক্কায় আহত হন একাধিক ছাত্র। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক তৃণমূল কংগ্রেসকে বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, ‘সবাই চালিয়ে খেলো।’ এবার পাল্টা হুঙ্কার দিলেন মদন মিত্র।
মদন মিত্র বরাবরই স্পষ্ট কথা বলতে ভালবাসেন। কোনও রাখঢাক না করেই তাই এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন। আজ, শনিবার সরাসরি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মদন মিত্র বলেন, ‘যত কাণ্ড যাদবপুরে। যাদবপুরে পা রাখার কথা বলছেন। আগে নিজের বাড়িতে পা রাখতে পারবেন কিনা, পাড়ায় সেই খবর নিন। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে…। এমন খেলা খেলেছে যে বিধানসভায় শূন্য হয়ে গিয়েছে। তার নীচে তো আর নামা যায় না। তৃণমূল কংগ্রেস জার্সি পরতে যাচ্ছে শুনলেই ওরা এমনিই ঘরে ঢুকে যাবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার সময় বাধা দেয় টিএমসিপি। তাতেই জোর হাতাহাতি হয় এসএফআইয়ের সঙ্গে। ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভায় আচমকা ঢুকে যায় বাম–অতিবাম বিক্ষোভকারীরা। তুমুল উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিস ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এবার মদনের মন্তব্য শুনে সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধরের কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গ কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ও কারও বাবা–কাকাদের জায়গা নয়। পড়ুয়ারা যখন নিগৃহীত হয়, পুলিশ যখন অত্যাচার করে, তখন সেই ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নামলে পল্টু–লাল্টুরা ভোগে চলে যায়। দম থাকলে মদন মিত্র নির্বাচনটা করে দেখান।’