মিল্টন সেন, হুগলি: আচমকা হাসপাতালে রোগীদের খাবার নিয়ে বিভ্রান্তি। ব্রেকফাস্টের কিছুক্ষণ পরেই দেওয়া হয় দুপুরের খাবার। বিষয়টি নজরে পড়তেই দুপুরের খাবার দেওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার। আর তারপরেই ছড়ালো খাবারে বিষক্রিয়ার গল্প। যা ঘিরে হুলুস্থুল কাণ্ড হাসপাতালে।
জানা গেছে, এদিন রোগীদের ব্রেকফাস্টের পরেই দুপুরের খাবার সকালবেলায় দিয়ে দিয়েছিলেন ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের রান্নাঘরের এক কর্মী। সকাল সকাল দুপুরের খাবার দেওয়া হয়েছে জানতে পেরে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ওয়ার্ড মাস্টার অফিসে খাবার দেওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তখন দায়িত্বে থাকা ফ্যাসিলিটি অফিসার ওয়ার্ডের সিস্টার ইনচার্জের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার দেওয়া বন্ধ করতে বলেন। ততক্ষণে ওয়ার্ডে থাকা অনেক রোগীকেই খাবার দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। অনেকে খাওয়াও শুরুও করে দিয়েছিলেন। হঠাৎই তাঁদের বলা হয় খাবার না খেতে। আর সেই নির্দেশ ঘিরেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। রোগীরা খাবার ফেলে দেন। খাবারে বিষক্রিয়ার গুজব রটে যায়।
এরপরই গোটা বিষয় নিয়ে ছানবিন শুরু করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের রান্না ঘরে গিয়ে খাবার পরীক্ষা করে দেখেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মৃন্ময় চক্রবর্তী। এদিন তিনি জানিয়েছেন, জেলা হাসপাতালে ব্রেকফাস্ট দেওয়া হয় সকাল ন'টা থেকে দশটার মধ্যে। এদিনও যথা সময়ে ব্রেকফাস্ট দেওয়া হয়। তারপরেই তিনি জানতে পারেন রান্নাঘরের কোনও একজন কর্মীর বাড়িতে কাজ থাকায় এগারোটার সময় রোগীদের দুপুরের খাবার দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা জানার পরই অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ওয়ার্ড অফিসে খাবার দেওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেন। ফ্যাসিলিটি ম্যানেজার সিস্টারকে জানান, খাবার যাঁদের দেওয়া হয়েছে, বাদ বাকিদের আর যাতে না দেওয়া হয়। আর এটাতেই একটা সমস্যা তৈরি হয়। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পরে। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই খাবার ঘরে গিয়ে বিষয়টা খতিয়ে দেখেছেন। তিনি নিজে খাবার খেয়ে দেখেছেন। খাবারে কোনও রকম সমস্যা নেই। তবুও ওই রান্না খাবার কিছুটা ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়েছে। সেই খাবার ফুড সেফটি আধিকারিকের মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হবে। পরবর্তী সময় কোনও অভিযোগ হলে যথাযথ তদন্ত হবে। খাবারের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে সুপার অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। আগামী দিনে দুপুরের খাবার যাতে এত তাড়াতাড়ি না দেওয়া হয় সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ ব্রেকফাস্ট খাওয়ার পর তাড়াতাড়ি খাবার দিলে সেই খাবার হজম হয় না। রোগীদের অসুবিধা হতে পারে।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা জানিয়েছেন, এদিন মাংস ভাত হয়েছিল। খাবার দেওয়ার পরেই হঠাৎ বলা হয় খাবার না খেতে। তাঁরা কেউ বুঝে উঠতে পারেন না কেনও খাবার দেওয়া হল? আবার কেনই বা খাবার খেতে বারণ করা হচ্ছে। এতেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। অনেকে খাবার ফেলে দেন। আসল বিষয়টা রোগীদের বুঝিয়ে বললে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।