• সোমবার স্বাভাবিকের পথে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়?
    এই সময় | ০৯ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিত মিলল। শনিবার উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত তাঁরা বার্তায় বলেন, ‘গত ১ মার্চের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। সে জন্য উপাচার্য হিসেবে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। যে সব পড়ুয়া জখম হয়েছে, তাদের সকলের সুস্থতা কামনা করছি।’ ভাস্কর এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আমি আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার সহানুভূতি এবং শুভ কামনা জানাতে চাই। ন্যায়বিচারের জয় হোক।’ এর পরেই এ দিন সন্ধেয় উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান যাদবপুরে আন্দোলনরত বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের আট প্রতিনিধি।

    অসুস্থ উপাচার্যকে দেখে বেরনোর পরে অন্যতম ছাত্র–প্রতিনিধি দেবার্ঘ্য যশ বলেন, ‘ভিসি স্যরের সঙ্গে অচলাবস্থা কাটানো নিয়ে কথা হয়েছে। তাঁকে বলেছি, তিনি ক্যাম্পাসে না–থাকায় পুলিশ বহু ছাত্রছাত্রীর বাড়িতে চিঠি পাঠাচ্ছে। অবিলম্বে এই হেনস্থা বন্ধ করতে তাঁর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’ দেবার্ঘ্যর দাবি, ‘উপাচার্য জানিয়েছেন এতে তিনিও উদ্বিগ্ন।’ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত সাহিল আলির গ্রেপ্তারির পরে তাঁর ব্যাপারে সে রকম খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না বলেও পড়ুয়ারা ভাস্করের কাছে অভিযোগ করেন।

    দু’পক্ষের এই কথাবার্তার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। এ দিন হাসপাতালে ভাস্করকে দেখতে গিয়েছিলেন সহ–উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। সূত্রের খবর, ভাস্কর তাঁকে ছাত্র–সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসতে বলেছেন। সেইমতো সোমবার সহ–উপাচার্য আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জুটার তরফেও আন্দোলনকারী ছাত্রদের ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কটের পথ থেকে সরে আসার অনুরোধ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ছাত্রদের বিরুদ্ধে যে ‘মিথ্যে’ অভিযোগ করা হয়েছে, তা প্রত্যাহারের জন্য রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে — এই দাবিতে আন্দোলনকারীরা এখনও অনড় থাকলেও সোমবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কট তুলে নিতে পারেন তাঁরা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের পরীক্ষা এবং ক্লাস বয়কট চলছে পুরোদমে। কলা ও বিজ্ঞান শাখায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ক্লাস হচ্ছে।

    হাসপাতালে দেখাসাক্ষাতের আগে যাদবপুরের সমস্ত স্টেকহোল্ডারের উদ্দেশে ভাস্কর আবেদন করেছিলেন, ‘আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রী ও অন্যান্য শিক্ষিত অংশীদারদের কাছে আবেদন করছি, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম, গবেষণা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করুন। ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র বিরাজ করুক। ক্যাম্পাসের সকল সমস্যা আলাপ–আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হোক।’

    অন্যদিকে গত শনিবারের ঘটনায় আহত ইংরেজি প্রথম বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায় গুরুতর জখম অবস্থায় এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তাঁকে এ দিন হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইন্দ্রানুজের বাবা অমিত রায় বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলেছেন ছেলেকে এখনও চার সপ্তাহ বাড়িতে বিশ্রামে থাকতে হবে। সে জন্য বাড়িতে হাসপাতালের মতো ব্যবস্থা করতে হবে। সেই আয়োজন হয়ে গেলেই রবি বা সোমবার ওকে বাড়িতে নিয়ে যাব।’ ঁউপাচার্যর স্ত্রী তথা চিকিৎসক কেয়া গুপ্ত বলেন, ‘ভাস্করের অবস্থা আগের থেকে ভালো। ছাত্রদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরে ও আর হাসপাতালে থাকতেই চাইছে না।’

  • Link to this news (এই সময়)