এই সময়, খড়্গপুর: খড়্গপুর টাউন থানার আইসি রাজীবকুমার পালকে ‘ক্লোজ়’ করার ঘটনায় জেলা পুলিশে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজীবকে কলকাতার ভবানী ভবনে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে এই নির্দেশ জারি করেন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)।
নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এ দিন রাত ১০টার মধ্যে তাঁকে ভবানীভবনে রিপোর্ট করতে হবে। আইসি যাতে এই নির্দেশ পালন করেন সে ব্যাপারে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারকেও বিষয়টি দেখতে বলা হয়।
হঠাৎ কেন এই নির্দেশ, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুর শহরের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না আইসি’র। অভিযোগ, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ জমছিল। তাঁরা বিষয়টি দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছিলেন। অন্য একটি সূত্রের খবর, খড়্গপুরের প্রোমোটারদের সঙ্গেও কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশ মহলের মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল।
বেআইনি বহুতল নিয়ে দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা শুরু করে। এই বিবাদে খড়্গপুর পুরসভা এবং প্রোমোটাররা এক হয়ে যায়। পুলিশ হয়ে যায় অন্যপক্ষ। জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রোমোটাররাও তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বকে সমস্যার কথা বিস্তারিত জানায়।
এরপরেই ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার কাছেও রিপোর্ট চান রাজ্য নেতৃত্ব। অন্য দিকে, খড়্গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কল্যাণী ঘোষকে দু’দিন আগে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়। তিনি ফিরে আসার পরেই আইসি’কে ‘ক্লোজ়’ করার নির্দেশ আসে।
পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিকের দাবি, ‘বর্তমানে খড়্গপুরে অপরাধ বেড়েছে এমন নয়। চুরি, ডাকাতি, মাফিয়ারাজ— সবই নিয়ন্ত্রণে। তারপরেও ‘ক্লোজ়’ করার নির্দেশের পিছনে নিশ্চয় অন্য কিছু রয়েছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘এই নির্দেশ নজিরবিহীন। যে দিন নির্দেশ দেওয়া হলো, সেদিনই রাত ১০টার মধ্যে রিপোর্টও করতে বলা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে অবশ্য পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা পুলিশের একাংশের দাবি, হতেও পারে এটা রুটিন বদলি। তবে যেভাবে করা হলো, তাতে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।