• নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় সড়কে থাকবে হেল্পলাইন
    এই সময় | ০৯ মার্চ ২০২৫
  • সঞ্জয় দে, দুর্গাপুর

    রাতের হাইওয়েতে মহিলারা কি নিরাপদ। হাইওয়েতে কি নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারেন তাঁরা। নৃত্যশিল্প সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরে প্রশ্নের মুখে পড়া সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই পুলিশ–প্রশাসনের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের।

    বৈঠকে ঠিক হয়েছে, জাতীয় সড়কে আরও বেশি করে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি কিছু দূর অন্তর রাস্তার ধারে লেখা থাকবে হেল্পলাইন নম্বর। যাত্রীদের কোনও সমস্যা হলে হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করা সাহায্য পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে রাতের জাতীয় সড়কে পুলিশের উপস্থিতি ও নজরদারি বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।

    এ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যাও বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। পথে হেল্পলাইন নম্বর দেখা যায় না। যাত্রীরা যাতে এই নম্বরে ফোন করে সাহায্য নিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া রাতে জাতীয় সড়কের কোন কোন জায়গায় পুলিশকর্মীরা দাঁড়িয়ে থাকেন, তা দেখা যায় না। পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর সঙ্গে যাত্রীরাও যাতে তাঁদের সাহায্য পান সেটা দেখতে হবে।’

    গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বুদবুদে একটি পাম্পে তেল নিয়ে বিহারের গয়া যাওয়ার পথে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে পানাগড়ের কাবাড়িপট্টির বাসিন্দা বাবলু যাদবের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে চন্দননগরের বাসিন্দা নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের। বাবলুর গাড়ি তাড়া করতে গিয়ে পানাগড় রাইসমিল গলির সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় সুতন্দ্রার গাড়ি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার।

    এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। রাতের হাইওয়েতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠে যায় প্রশ্ন। ধারাবাহিক খবর প্রকাশ করে সত্যি ঘটনা তুলে ধরে ‘এই সময়’। সেই সময়ে অনেকেই বলেছিলেন, রাতের হাইওয়েতে পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না। কারও বক্তব্য ছিল, হাইওয়ের ধারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ১০৩৩ হেল্পলাইন নম্বর লেখা থাকে না।

    এ প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, ‘রাতের হাইওয়েতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পেট্রোলিং গাড়ি রয়েছে। দুর্গাপুর এরিয়ার মধ্যে তিন থেকে চারটি গাড়ি সবসময়ে হাইওয়ের উপর থাকে। এ ছাড়া ডায়াল ১০০ নম্বরে ফোন করলে সাহায্য পাওয়া যাবে। পানাগড়ে দুর্ঘটনার পরে রাতের হাইওয়েতে মহিলারা নিরাপদ নন, এমন প্রচার হয়েছে। এটা ঠিক না। মহিলা–সহ সমস্ত যাত্রীরাই রাতের হাইওয়েতে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবেন।’

    নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে দুর্গাপুরের বাসিন্দা অনুপ দত্ত বলেন, ‘কাজের জন্য প্রায়ই গাড়ি নিয়ে জাতীয় সড়কে যাতায়াত করতে হয় আমাকে। দু’টি লেনের মাঝে ডিভাইডারের উপরে একাধিক জায়গায় সেফটি সংক্রান্ত বোর্ড লাগানো আছে। কিন্তু সেখানে হেল্পলাইন নম্বর নেই। থাকলে যাত্রীদের সুবিধা হয়।’

    এ প্রসঙ্গে জাতীয় সড়কের পানাগড় বারবাড্ডা হাইওয়ের প্রজেক্ট ডিরেক্টর প্রণব মাহাতো বলেন, ‘ডিসপ্লে বোর্ডে হেল্পলাইন নম্বর লেখা নেই। বিষয়টি দেখা হবে। সুরক্ষার জন্য প্রতি এক কিমি অন্তর সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হবে। এখন জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কাজ শেষ হয়ে গেলে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও ভালো হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)