এই সময়, কৃষ্ণনগর: পুকুরে নেমে রিলস বানাতে গিয়েছিল এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক ও এ বারের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এক বন্ধু ডুবে যাওয়ার সময়ে হাত তুলে অন্য বন্ধুর কাছে বাঁচানোর আর্জি জানিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যায় দু’জনেই। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি তাদের। শনিবার দুপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাট থানার বৈদ্যপুর-২ পঞ্চায়েতের পুটখালি গ্রামে।
মৃত দুই ছাত্রের নাম সুফল দাস (১৮) এবং রুদ্র বালা (১৬)। দু’জনেরই বাড়ি স্থানীয় কুশুরিয়া গ্রামে। প্রীতিনগর ভূদেব স্মৃতি বিদ্যাপীঠের ছাত্র ছিল তারা। কেউই সাঁতার জানত না-বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
সুফলের দিদা কাকলি দাস বলেন, ‘সকালে নাতি পড়তে গিয়েছিল। পরীক্ষা চলছে বলে বাড়ি আসার পরেও ওর মা ওকে পড়তে বসতে বলেছিল। কিন্তু ‘যাবো আর আসবো’ বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল নাতি। তার পর গ্রামের একজন খবর দেয় দাদুভাই আর নেই। হন্তদন্ত হয়ে গিয়ে দেখি সে মারা গিয়েছে।’ রুদ্রর এক আত্মীয় বলেন, ‘কেউই সাঁতার জানত না। ভালো মোবাইলও নেই ওর। ছবি তুলে দেওয়ার জন্য ওকে ডেকেছিল ওর বন্ধু। আমরা বলেছিলাম, তাড়াতাড়ি চলে আসিস। তার পর এমন খবর শুনতে হল।’
প্রীতিনগর ভূদেব স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন, ‘সুফলের এ দিন কোনও পরীক্ষা ছিল না। আগের দু’টি পরীক্ষা ঠিকঠাক দিয়েছিল। আর রুদ্র এ বার আমাদের স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল। দুই ছাত্রের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর শুনতে হবে ভাবতেই পারছি না।’
স্থানীয় তৃণমূল নেতা মনোজ ঘোষ বলেন, ‘দুজনেই খুবই সাধারণ ঘরের ছাত্র। একজনের বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অন্য ছাত্রের বাবা আগেই মারা গিয়েছেন। ছোটবেলা থেকে বেশ লড়াই করেই ওদের সংসার চলছিল। তার মধ্যেই এমন দুর্ঘটনা ঘটে গেল।’