• বেলঘরিয়ার শুটআউটে পুরনো শত্রুতা নাকি এলাকা দখলের লড়াই? প্রাণহানির আশঙ্কায় কাউন্সিলরও
    প্রতিদিন | ১০ মার্চ ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: পুরনো শত্রুতার জের! বেলঘরিয়ায় তৃণমূলের আইএনটিটিইউসির নেতা বিকাশ সিংকে লক্ষ করে গুলির ঘটনায় নেমে প্রাথমিকভাবে সেটাই অনুমান। বিকাশ-সহ চিকিৎসা করাতে আসা সন্তু দাসের উপর শুটআউটের এই ঘটনায় উঠে এসেছে ইন্দাল যাদব বলে স্থানীয় এক যুবকের নাম। আহত বিকাশ সিংয়ের ভাই মুকেশ সিংয়ের অভিযোগ, এই ইন্দাল বছর খানেক আগে এক মহিলাকে কটূক্তি করায়, বিকাশ দলবল নিয়ে মারধর করে। পুলিশের তদন্তেও প্রাথমিকভাবে পুরনো শত্রুতার কথা উঠে এসেছে বলেই জানিয়েছেন বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং। পাশাপাশি, এই ঘটনার পর আতঙ্কিত কামারহাটি পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মলা রায়। প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

    শনিবার রাতে বেলঘরিয়ার ৪ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন চায়ের দোকানে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ করে গুলি চলে। তিনি-সহ আহত হন চিকিৎসা করতে আসা সন্তু দাস নামের এক ব্যক্তি। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচার হয়েছে বিকাশের। তিনি কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ঘটনার পর প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে কাউন্সিলর নির্মলা রায়ের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য, “রাবণের সন্তানদের বধ করে নয়, যুদ্ধ শেষ হয়েছিল বারণের মৃত্যুর পরেই। শুধু আমি নয়, এক ডজন কাউন্সিলর এই রাবণের হেনস্থার শিকার। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। আমি বললাম, এর জন্য কাল আমারও মরতে হতে পারে। কে এই রাবণ, সেটা একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই জানাব।” রবিবার ফোনে তিনি স্পষ্ট করে কারও নাম না জানালেও, পক্ষান্তরে শাসক দলেরই কোনও রাঘব বোয়ালের বিরুদ্ধেই যে এই অভিযোগ তুলেছেন তা স্পষ্ট।

    এদিকে, ইন্দাল যাদব এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করে বিকাশের ভাই মুকেশের দাবি, “এক বন্ধুর জন্মদিনে গিয়ে মদ্যপান করেছিল ইন্দাল। তারপর যাঁর জন্মদিন ছিল তাঁর বাইক নিয়ে সে আরও দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে দাদাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।” প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশও মনে করছে এই শুটআউটের পিছনে রয়েছে পুরনো কোন্দল। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং বলেন, “তিনজনকে হামলাকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই স্থানীয়। হামলায় ব্যবহৃত বাইক উদ্ধার হয়েছে। বিকাশ সিংয়ের অস্ত্রোপচার হয়েছে, এখন সে বিপদ মুক্ত। তাঁর বয়ান নেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত শত্রুতার থেকেই এই হামলা বলেই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। জখম আরেকজন সন্তু দাসকে চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

    যদিও ব্যক্তিগত শত্রুতার কথা মানতে নারাজ কাউন্সিলর। তাঁর দাবি, “বিকাশের উপর এই নিয়ে তৃতীয়বার হামলা হল। মাস ছয়েক আগে প্রথম ও মাস দুয়েক আগে শেষ হামলা হয়েছিল। প্রত্যেক হামলাকারীকেই বোরে হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।” দলীয় কাউন্সিলর এহেন মন্তব্যে নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানিয়েছেন, “কামারহাটি এলাকায় এধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশের উপর সম্পূর্ণ আস্থা আছে। অপরাধীরা গ্রেপ্তারের পরই হামলার কারণ পরিষ্কার হবে। তবে কাউন্সিলর হয়ত এমন কিছু জানেন বলেই একথা বলছেন। তবে সেটা কী, তা আমি বলতে পারব না।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)