• বাসররাতেই নববধূর ফোনে প্রাক্তনের মেসেজ! রেগেমেগে থানায় বর, ভাঙল সংসার
    প্রতিদিন | ১০ মার্চ ২০২৫
  • কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: বাসররাতে নববধূর মোবাইলে একটি মেসেজ এসেছিল। সেটি কোনওভাবে চোখে পড়ে যায় বরের। আর তার থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে প্রবল বচসা। ঘটনা শেষপর্যন্ত গিয়ে পৌঁছয় থানায়। পুলিশও বর-নববধূর মধ্যে মধ্যে বিবাদ মেটাতে পারেনি। শেষপর্যন্ত বাসররাতেই ভাঙল সদ্য হওয়া সংসার। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকায়।

    স্ত্রীকে না নিয়েই বর ফিরে গেলেন নিজের বাড়িতে। আদালত পর্যন্ত বিষয়টি গড়িয়েছে। বিচারকের নির্দেশে পাত্রীকে হোমে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, বিয়েকে কেন্দ্র করে অশান্তি পাকানোর অভিযোগে উভয়পক্ষের মোট ছ’জনকে আটক করেছে পুলিশ। সদ্য আনন্দে মেতে থাকা, আলো ঝলমলে বাড়ি ম্লান হয়ে গেল গোটা ঘটনায়।

    বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকার একটি গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। পাত্রের বাড়ি বীরভূমে। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। দুই পরিবারের মধ্যে দেখাশোনা করে বিয়ে ঠিক হয়। পাত্র ও বরযাত্রীরা মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলেন। শুক্রবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ সিঁদুরদান হয়। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষের পরেই বাসর অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো বর-নববধূ পাশাপাশি বসেছিলেন। খানিকক্ষণের জন্য নতুন বর বাইরে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু দ্রুত তিনি ফিরে আসেন। দেখতে পান, নতুন বউ মোবাইল ফোনের মধ্যে মগ্ন হয়ে আছেন। জানা গিয়েছে, মোবাইলে আসা একটি মেসেজ বরের নজরে পড়ে যায়। আর তারপরই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি।

    হইচই শুরু হয়ে যায় অনুষ্ঠানবাড়িতে। দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র বচসাও শুরু হয়। এদিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বর সোজা থানায় গিয়ে হাজির। একে একে দুই পরিবারের সদস্যরাও থানায় হাজির হন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে থানাতেই পুলিশ বিবাদ মীমাংসার চেষ্টা করে। কিন্তু কখনও বর বেঁকে বসেন। কখনও আবার নববধূ সংসার করতে চান না। পাত্রপক্ষের দাবি, মেসেজে লেখা ছিল, ‘তুমি এখনও চলে এসে। আমি ঘর করতে রাজি আছি।’ কনের বক্তব্য, যাঁকে নিয়ে সারা জীবন কাটাতে হবে। তিনি মোবাইলে আসা একটি মাত্র মেসেজের জন্য এমন কাণ্ড ঘটাবেন! তা মানা যায় না। তাই বিয়ে হলেও স্বামীর ঘরে সংসার করতে পারবেন না তিনি। এদিকে স্ত্রী হিসেবে তাঁকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন নতুন বরও। মেয়েরবাড়ির লোকজন অনেক কিছু গোপন করেছে বলে দাবি তাঁর। শুক্রবার দিনভর এই টানাপোড়েন চলতে থাকে।

    একসময় বর ও পাত্রপক্ষ ফিরে যান বীরভূমের বাড়িতে। বিষয়টি জল গড়ায় কান্দি মহকুমা আদালত পর্যন্ত। নববধূর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠায়। বিচারকের সামনে তিনি গোপন জবানবন্দি দেন। এরপর আদালতের নির্দেশেই তাঁকে হোমে পাঠানো হয়। কনের সাজেই ওই বধূ হোমে গিয়েছেন বলে খবর।
  • Link to this news (প্রতিদিন)