এই সময়: জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে রবীন্দ্র সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সেখানকার পাখি, কীটপতঙ্গ, জলজ প্রাণীরা সমস্যায় পড়ছে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন একদল পরিবেশকর্মী। কাল, মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ সরোবরের ১২ নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশেরও ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
৭৩ একর জায়গা জুড়ে থাকা রবীন্দ্র সরোবর ‘দক্ষিণ কলকাতার ফুসফুস’ হিসেবেও পরিচিত। ২০০৩ সালে তা জাতীয় সরোবরের মর্যাদা পায়। চত্বরে গাছ রয়েছে মোট ৭৫ প্রজাতির। আছে ১২–রও বেশি প্রজাতির জলজ প্রাণী। এ বাদে নানা ধরনের কীটপতঙ্গও রয়েছে। এমন একটি লেক রক্ষণাবেক্ষণে কেএমডিএ উদাসীন বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের একাংশের। তাঁদের দাবি, সরোবরকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। জীববৈচিত্র রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে প্রশাসনকে, জাতীয় পরিবেশ আদালত যে সব নির্দেশ দিয়েছে, সেগুলি মানতে হবে। লেকের ভিতরে সামাজিক উৎসব বন্ধের দাবিও তুলছেন এঁরা।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘বহু দিন ধরে রবীন্দ্র সরোবরের উপরে নির্যাতন চলছে। একে রক্ষার যে চেষ্টা শুরু হয়েছে, সেটাকে আন্দোলনে পরিণত করা না-গেলে এই সবুজকে বাঁচানো যাবে না।’ আর এক পরিবেশকর্মী সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষের কথায়, ‘রবীন্দ্র সরোবরের বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণে কোনও গাফিলতি রাখা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু সরোবরে প্লাস্টিকের ব্যবহার এখনও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। বরং প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে জলদূষণ বাড়ছে।’
দীর্ঘদিন ধরেই রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ–রক্ষায় লড়াই করছেন আসা সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘বহু বছর হলো সরোবরের জলাশয়ের পলি তোলা হয়নি। ফলে জলের দূষণ বাড়ছে। জলজ প্রাণীরা মারা যাচ্ছে হামেশাই। বহুবার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।’
কেএমডিএ–র চেয়ারম্যান তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ যাতে দূষিত না হয়, সে দিকে সব সময়ে খেয়াল রাখা হয়। জাতীয় পরিবেশ আদালত যে নির্দেশগুলি দিয়েছে, সে সবই আমরা বাস্তবায়িত করেছি।’