এই সময়, খড়দহ: খড়দহ শ্যামসুন্দর ফেরিঘাট থেকে রিষড়ার মধ্যে কি বন্ধ হতে চলেছে ফেরি চলাচল? রিষড়া পুরসভার এক সিদ্ধান্তের অভিযোগ ঘিরে তৈরি হয়েছে ফেরিঘাট বন্ধ হওয়ার জল্পনা। তবে বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে খড়দহ পুরসভা।
দু’পারের মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ার জল্পনা শুরু হতেই খড়দহের লক্ষ লক্ষ মানুষ চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। শুধু তাই নয়, ফেরিঘাটের উপরে নির্ভর অটোচালক, দোকানদাররাও কার্যত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
কারণ, ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে গেলে তাঁদের রুটিরুজি প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতিবাদে সোমবার স্থানীয় দোকানদার, অটো ও টোটোচালকরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খড়দহ পুরসভায় স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে খবর।
খড়দহ শ্যামসুন্দর ঘাট থেকে রিষড়ার মধ্যে বহু বছর ধরে ফেরি চলাচল করে। নিত্যদিন প্রচুর মানুষ এই ফেরিঘাটের দিকে যাতায়াত করেন। বর্তমানে দু’পারের মধ্যে ফেরিঘাট পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছে রিষড়া পুরসভা।
জানা গিয়েছে, রাসখোলা ঘাটের সামনে ভাটার সময় চড়া পড়ার কারণে প্রতিদিন দু’দফায় কয়েক ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। এই সমস্যার কারণে, রবিবার ভোর ৫টা ২০ থেকে প্রথম ফেরি চলা শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু হয় সাড়ে সাতটার পর। আবার বিকেল তিনটে থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ফেরি বন্ধ ছিল। যার ফলে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন যাত্রীরা।
খবর নিয়ে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০২৪ সালে শ্যামসুন্দর ঘাট থেকে প্রায় এক কিমি দূরে টিটাগড় পুরসভা এলাকার লোহাপুল লাগোয়া ফাঁকিঘাট কাঁচা লাইনে নতুন করে খড়দহ ফেরিঘাট তৈরি হয়। যদিও তা এখনও তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি রিষড়া পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভাটার সময়ে শ্যামসুন্দর ঘাটে বন্ধ থাকা ফেরি ওই ঘাট দিয়ে চালানো হবে। ওই ঘাটটি টিটাগড়ের একটি বন্ধ কারখানার পিছনের দিকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই ফাঁকা এলাকা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল। ইতিমধ্যে নতুন ফেরিঘাটের দরজা ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে রিষড়া পুরসভার এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দু’পাড়ের যাত্রীদের মধ্যে। শ্যামসুন্দর ঘাটের দোকানদারদের কথায়, ‘নতুন ফেরিঘাটের নাম শুনে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মাঝেমধ্যে ওখানে বোমা–গুলি চলে। চড়ার সমস্যা এখানে আগেও ছিল। তখন পাশাপাশি তিন-চারটি নৌকো রেখে তার উপর দিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করত।’
ফেরিঘাটের দোকানদার এবং অটো ও টোটোচালকদের অভিযোগ, ঘাটটি এখান থেকে সরানোর চক্রান্ত হচ্ছে। সোমবার তাঁরা খড়দহ পুরসভায় স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে রিষড়ার পুরপ্রধান বিজয় সাগর মিশ্র বলেন, ‘মানুষের সমস্যার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পোর্ট ট্রাস্ট ড্রেজ়িং করলে সমস্যা থাকত না। নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি।’
যদিও এ সবের কিছুই খড়দহ পুরসভা জানে না বলে জানিয়েছেন খড়দহের উপ পুরপ্রধান সায়ন মজুমদার। তিনি বলেন, ‘রিষড়া পুরসভা এখন ফেরিঘাট চালাচ্ছে। আমাদের পুরসভাকে মাসে ১০ হাজার টাকা করে ওদের দেওয়ার কথা ছিল। তা তো দেওয়া হচ্ছেই না। উল্টে তারা একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আশা করব আমাদের সঙ্গে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে রিষড়া পুরসভা।’