এই সময়, মালবাজার: স্বাস্থ্য দপ্তরের গ্রামীণ এলাকার পরিকাঠামোর মেরুদণ্ড ধরা হয় যাঁদের সেই সুপারভাইজারদের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে। একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জন্য কমপক্ষে একজন স্বাস্থ্য দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক বা সুপারভাইজারের পদ রয়েছে। কিন্তু জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় সুপারভাইজার পদ ফাঁকা হয়ে রয়েছে।
শিশুদের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম নজরে রাখা সুপারভাইজারদের প্রধান দায়িত্বের অন্যতম। এইসব ভ্যাকসিন ব্লক স্তর থেকে গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে এসে তা সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা সুপারভাইজারদের কাজের মূল অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। মালবাজার স্বাস্থ্য ব্লকেই যেমন ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন সুপারভাইজার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে একজনও নেই। মালবাজারের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দীপঙ্কর কর সেই কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলার প্রত্যন্ত ব্লক হিসেবে পরিচিত নাগরাকাটা ব্লকেও অন্তত তিনজন স্থায়ী সুপারভাইজারের পদ খালি পড়ে রয়েছে।
সব এলাকাতেই অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে সুপারভাইজারদের কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অথচ সুপারভাইজারদের যে ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়োগ হয় বা পরবর্তীতে যে ধরনের প্রশিক্ষণ তাঁরা পেয়ে থাকেন তার কোনওটাই এই অস্থায়ী কর্মীদের নেই বলেই দাবি স্বাস্থ্যকর্মীদেরই একাংশের। সেইসঙ্গে তাঁদের দাবি, এই অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীদের শুধুমাত্র পতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধের কাজে ব্যবহারের জন্যই নিয়োগ করা হয়েছিল।
সম্প্রতি লাটাগুড়ি এলাকার একটি কেন্দ্রে দেড় মাসের শিশুর টিকা নেওয়ার পর রাতে মারা গেলে তাকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। যদিও তা পরবর্তীতে স্বাস্থ্য দপ্তর সামাল দিতে পারলেও ওই ঘটনায় এই শূন্য পদের বিষয়টি আরও একবার যেন সামনে চলে আসছে। শিশু মৃত্যুতে টিকার কোনও যোগ না থাকলেও আগামীতে সুপারভাইজারদের অনুপস্থিতি জনিত কারণে বড় কোনও সমস্যা ঘটে যেতেই পারে বলে আশঙ্কাও রয়েছে। এমনিতেই গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো নানা পরিষেবার ঘাটতি নিয়ে ধুঁকছে। তার মধ্যে সুপারভাইজার পদ খালি পড়ে থাকায় সমস্যা আরও ঘোরালো হচ্ছে।