দিগন্ত মান্না
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ঘিরে রবিবার দিনভর উত্তেজনায় টানটান রইল গোটা দেশ। রাজনীতিবিদ থেকে পর্দার তারকা, প্রত্যেকের চোখ টিভির পর্দায়। ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে আলাদা উন্মাদনা ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের জামিট্যা গ্রামে।
কারণ? ঘরের ছেলে দয়ানন্দ গরানি যে এখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের ফিটনেস ট্রেনার। ফাইনাল দেখতে রবিবার দুপুর থেকে কার্যত বনধের চেহারা নিয়েছিল জামিট্যা। বন্ধ বাজার-হাট। যেন অঘোষিত কার্ফু চলছে। সকলের নজর টিভির পর্দায়। ২০২০ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলে ফিটনেস ট্রেনার হিসেবে যোগ দেন শহিদ মাতঙ্গিনী এলাকার জামিট্যার বাসিন্দা দয়ানন্দ।
রোহিত শর্মারা ফাইনালে ওঠার পর থেকে গোটা দেশের পাশাপাশি ক্রিকেট-জ্বরে ভুগতে শুরু করেছে দয়ানন্দ গ্রামও। এখানকার জামিট্যা স্পোর্টস অ্যাকাডেমির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ। রূপনারায়ণ নদের চরে বিশাল ফাঁকা মাঠে দয়ানন্দ ক্রিকেটের পাঠ নিতেন। সেখানেই এখন তাঁর অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীরা অনুশীলন করেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মাঠে পৌঁছে যায় জামিট্যা শহিদ মাতঙ্গিনী স্পোর্টস অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীরা।
ভারতীয় দলের সাফল্য কামনা করে নেটে তারকাদের ছবি ঝোলানো হয়। দু'দিকে ছিল জাতীয় পতাকা। অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকার নীচে দাঁড়িয়ে দেশের হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। অ্যাকাডেমির উদ্যোগেই জামিট্যায় একটি হলঘরে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এলাকার মানুষও ভিড় করেন ফাইনাল দেখতে।
জয়ের আনন্দ উপভোগ করার জন্য আগে থেকেই আতশবাজি মজুত করে ফেলেন স্থানীয়রা। খেলা চলাকালীন জামিট্যা জুড়ে শুধু বাজির শব্দ শোনা গিয়েছে। অ্যাকাডেমির সম্পাদক শ্যামলেন্দু আদক বলছিলেন, ‘ভারতের জয়ের ব্যাপারে আমরা শুরু থেকেই নিশ্চিত ছিলাম। জামিট্যার মানুষ আজ সকাল থেকে ক্রিকেট-জ্বরে আক্রান্ত। এই গ্রামের ছেলে দয়ানন্দ ভারতীয় ক্রিকেট দলের ট্রেনিং অ্যাসিস্ট্যান্ট। আমাদের কাছে তার গুরুত্বই আলাদা।’
এ দিন দুপুরের পরেই বন্ধ হয়ে যায় জামিট্যা বাজার। রাস্তাঘাট শুনশান। বাকিদের মতো বাড়িতে বসে টিভিতে ফাইনাল খেলা দেখেছেন দয়ানন্দের বাবা ও মা। দয়ানন্দের মা আভারানি গরানি বলেন, ‘ছেলে প্রতিদিনই ফোন করে খোঁজ নেয়। আজ সকালেও কথা হয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমিও নিশ্চিত ছিলাম।’