সমীর মণ্ডল, মেদিনীপুর
‘জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।’ মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের ‘চাঁদমিয়াঁর’ কথা সবার জানা! তিনি টিয়া পাখিদের পাহারাদার। লাঠি হাতে পাহারা দেন। চাঁদমিয়াঁর মতো দাপুটে পক্ষীপ্রেমী না হলেও মেদিনীপুর শহরের শিক্ষক কৌশিক চক্রবর্তীর ভালোবাসাটা একটু অন্যরকম।
তাঁর আবার পায়রার প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। দিন শুরু করেন পায়রাদের খাবার খাইয়ে। সকাল হলেই চাল-গম ব্যাগে ভরে মোটরবাইক নিয়ে চলে যান মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে। প্রতিদিন শ’খানেক পায়রা হাজির হয় সেখানে। ঝড়–জল–বৃষ্টি যাই হোক না কেন, নিয়মের বদল হয় না। কৌশিক বলেন, ‘ওদের না-খাওয়ালে দিনটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’
তিনি জানিয়েছেন, পায়রাদের খাওয়ানোর জন্য প্রতি মাসে ৪৫ থেকে ৫০ কেজি চাল-গম লাগে।
সংসারের অন্য খরচের সঙ্গে এটাও ধরা থাকে বলে জানিয়েছেন কৌশিক। তিনি জানিয়েছেন, লকডাউনের সময়ে একদিন এক ভদ্রলোক বিস্কুট গুঁড়ো করে ছড়ানোর পরে পায়রার ঝাঁক নেমে আসতে দেখেছিলেন।
তখন থেকেই চাল নিয়ে এসে খাওয়ানো শুরু করেন। সেটা এখন এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পায়রাগুলো আমাকে চিনে গিয়েছে। মোটরবাইক নিয়ে এসে দাঁড়ালেই ওরা সব চলে আসে।’
কৌশিকের স্ত্রী পৌলমী ও মেয়ে ঐশানী এই কাজে তাঁকে উৎসাহ দেন। মাঝেমধ্যে মেয়েকেও নিয়ে আসেন পায়রাদের খাওয়াতে। স্থানীয় দোকানদার, টোটোচালকরা বলেন, ‘ওই ভদ্রলোককে দেখলেই পায়রাগুলো চলে আসে।’