• Old lady celebrating last wish at old age home | মরার আগে একবার 'ভার্জিন' ঠোঁট ছোঁবে শ্যাম্পেইন, বৃদ্ধাশ্রমেই আশিতে ইচ্ছাপূরণ কণিকার!
    ২৪ ঘন্টা | ১০ মার্চ ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এ যেন রূপকথার গল্প।  প্রায় ষাট-বাষট্টি বছর আগে একুশ-বাইশের যুবতী কণিকা (নাম পরিবর্তিত) যখন কলেজে পড়েন তখন। বন্ধুরা মিলে কোন একটা বিদেশি সিনেমা দেখছিলেন। সেখানে নায়িকার রক্তাভ ঠোঁট ছুঁয়েছে শ্যাম্পেইনের গ্লাস। যুবতীরও দু'চোখ ভরা স্বপ্ন। মনে সাধ জেগেছিল, সেও একদিন ওই নায়িকার মতো শ্যাম্পেইন খাবে। কিন্তু সালটা ১৯৬৫-৬৬, সে সময়ের সমাজ আর আজকের সমাজের আকাশ-পাতাল পার্থক্য। সমাজের রক্তচক্ষুর ভয়ে সলজ আশা বুকেই থাকে। তারপর কত বইতে পড়েছেন— পাশ্চাত্যে মেয়েরা স্বাধীন, তাঁরা ইচ্ছেমতো চলাফেরা করে, তারা ওয়াইনও খায়। তাঁর বুকের আকাঙ্ক্ষাটা আবারও স্বপ্ন দেখেছিল। 

     Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News

    কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবার সে আশায় জল ঢালে। বিয়ের পর কণিকা আদুরে বায়না করেন স্বামীর কাছে, শ্যাম্পেইন খাওয়ার। কিন্তু পরিবারের জাঁতাকলে সে আশ্বাস মিলিয়ে যেতে দেরি হয়নি। ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কপিল দেবের ভারত। লর্ডসের ব্যালকনিতে বিশ্বকাপ হাতে স্বপ্নের রাজপুত্ররা,হাতে সেই শ্যাম্পেইনের বোতল। উচ্ছ্বসিত বধূঁর মনে আবার জেগে উঠেছিল সেই সযত্নে লালিত স্বপ্ন। মধ্যবয়সী নারী মুহূর্তে পৌঁছে গেলেন তার কিশোরী বেলায়। এবারও শখ-সৌখিনতার বিলাসিতা করার সুযোগ হয়ে ওঠে নি। দিন-মাস-বছর গড়িয়ে নদীর বুকে চরা পড়ে। আর নারীর চুলে রুপোলি রং ধরে। কিন্তু শ্যাম্পেইনের বোতলের ছিপি আর খোলেনা।

    সেই যুবতী, এখন বৃদ্ধা। আশি পেরিয়েছেন। নানা ঘাট ঘুরে ঠাঁই হয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার এক বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে সকলকে তিনি জানান- "জানো, আমার না খুব ইচ্ছে ছিল শ্যাম্পেইন খাব। এ জন্মে তো আর হল না, পরের জন্মে ঠিক ফ্রান্সে জন্মাব আর শ্যাম্পেন টেস্ট করব।" কে জানত যে তাঁর বুকের মধ্যে ফল্গুধারার মতো আজও বয়ে চলেছে সেই ইচ্ছেটা! 

    আর এরপরই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বৃদ্ধাশ্রম এর সকল আবাসিক এবং কর্মীবৃন্দ নানা রকম দোলাচলের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেন আশি পেরোন সেই বৃদ্ধার মনের ইচ্ছে অন্তত একবার পূরণ করতেই হবে। সমাজের ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করে, বৃদ্ধাশ্রমে শ্যাম্পেইনের বোতল তুলে দেওয়া হয় চির তরুণী সেই বৃদ্ধার হাতে। মুহূর্তে সময় থেমে যায়। কোনদিন সুরা স্পর্শ না করা ভার্জিন ঠোঁটে তখন হাসি। শ্যাম্পেইনের ছিপি খুলে ফেনা উড়িয়ে, উদযাপন করেন বহুদিনের লালিত ইচ্ছেকে। বৃদ্ধাশ্রম এর আবাসিক এবং কর্মীবৃন্দ সমাজমাধ্যমে এই ঘটনাটি শেয়ার করেছেন। প্রগতিশীল এই বৃদ্ধা মনে করেন এই ঘটনা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত এবং জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও যে ইচ্ছেপূরণ করা যায়- এই বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক দিকে দিকে।

     

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)