• বাঁকুড়ায় ২৮ জন মৃতের নাম তালিকায়, বাগদায় ৪১৮জন ভুয়ো ভোটার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ মার্চ ২০২৫
  • বাঁকুড়া ও ডোমকলে ভোটার তালিকায় ব্যাপক গরমিল। একের পর ভূতুড়ে ভোটারের আধিপত্য ভোটার তালিকা জুড়ে। শুধুমাত্র বাঁকুড়া শহরেই ২৮ জন মৃত ভোটারের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গিয়েছে। ইতিমধ্যে এই মৃত ভোটারদের চিহ্নিত করেছেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। আগামী দিনে আরও গরমিল নজরে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একইভাবে মুর্শিদাবাদের ডোমকলেও একাধিক ভুয়ো ভোটারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রের দুই জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভিপতির নাম পাওয়া গিয়েছে ভোটার তালিকায়। ওই ব্যক্তির নাম বাসির মোল্লা। তিনি সারাংপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। বর্তমানে তিনি কলাবেড়িয়ার ৭২১ নম্বর সিরিয়ালে বসবাস করেন। সেখানকার ভোটার তালিকায় তাঁর নাম থাকলেও বেনিয়াখালির বুথের ২২৬ নম্বর সিরিয়ালেও তাঁর নাম পাওয়া গিয়েছে।

    বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হতেই সরব হয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা। বাসির মোল্লার পাল্টা প্রশ্ন, ‘বিরোধীরা কী করছিলেন এতদিন! ওরা জানে দীর্ঘদিন ধরে আমি বেনিয়াখালিতে থাকি না। অভিযোগ দিয়ে কেন তাঁরা নাম কাটাননি?’ ওই কথার উত্তরে সিপিএমের ডোমকল এড়িয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রানা বলেন, ‘আমরা বারবার অভিযোগ করেছি। কিন্তু নাম বাদ দেওয়া হয়নি।’

    শুধু বাঁকুড়া বা মুর্শিদাবাদ নয়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভুয়ো ভোটারের ছড়াছড়ি। বাগদা ব্লকের ১৩ টি বুথে ৪১৮ জন ভূতুড়ে ভোটারের সন্ধান মিলেছে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ভোটার তালিকায় বিভিন্ন রকম ত্রুটি লক্ষ্য করা গিয়েছে।

    এদিকে জলঙ্গির ঘোষপাড়াতেও এক মহিলার নাম দুই জায়গায় পাওয়া গিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একই ভোটার তালিকার ৩৩৫ নম্বরে সাবিনা বানুর নাম রয়েছে। তাঁর পিতার নাম সাইফুল ইসলাম মোল্লা। তালিকার ৩৬০ নম্বর সিরিয়ালে নাম রয়েছে সাবিনা বানুর স্বামী রবিউল ইসলামের নাম। প্রশ্ন উঠছে, একই মহিলার নাম দুই জায়গায় কী করে হল? জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রাকিবুল ইসলাম রকি জানিয়েছেন, বিষয়টি কমিশনকে জানানো হবে। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ওই মহিলার বিয়ের পর ভোটার তালিকায় অভিভাবক হিসেবে পিতার নাম পরিবর্তন করে স্বামীর নাম যুক্ত করার সময় এই বিভ্রাট ঘটেছে। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বাপের বাড়ির নামটি বাদ দেওয়া হয়নি। সেজন্য দুটি নামই ভোটার তালিকায় থেকে গিয়েছে।

    উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যে ‘ভুতুড়ে’ ভোটার নিয়ে দিল্লিতে আরও চাপ বাড়াতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই লক্ষ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভূতুড়ে ভোটারের অনুসন্ধান চলছে। ভোটার লিস্ট নিয়ে এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে মন্ত্রীরাও। এ ব্যাপারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ৩ মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা থেকে ডুপ্লিকেট এপিক নম্বর সরানো হবে। সেই বিষয়ে এবার নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দেবে তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার বিকেলে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করবেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১০ জন সাংসদের একটি প্রতিনিধি দল।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)