নারায়ণগড় কাণ্ড: মেডিক্যাল টেস্টে কোনও প্রমাণ মেলেনি, বলছে পুলিশ সূত্র
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ মার্চ ২০২৫
নারায়ণগড়ে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পার্টি অফিসে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন বিজেপির এক প্রাক্তন কর্মী। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ বিজেপির। এদিকে পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রাথমিক যে মেডিক্যাল রিপোর্ট এসেছে, তাতে তেমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পেলে তবেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখনও পর্যন্ত সেই অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। মেডিক্যাল টেস্টেও কিছু পাওয়া যায়নি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ওই মহিলার অবস্থা স্থিতিশীল। মেডিক্যাল রিপোর্টের বিষয়ে আমি কিছু বলব না। কারণ ওটা তদন্তাধীন বিষয়। নিয়ম অনুযায়ী, যথাযথ ভাবে সবকিছু সম্পন্ন হবে।
জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা যে অসত্য, মেডিক্যাল রিপোর্টে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। যদি মহিলার সঙ্গে কোনও ভাবে অভদ্র আচরণ হয়ে থাকে, তা হলে দলীয় স্তরে তদন্ত করে দেখা হবে। তাতে কোনও ত্রুটি পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নেতৃত্বকে বলা হবে।
মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের মকরামপুর এক প্রাক্তন বিজেপি কর্মী তৃণমূলের দাপুটে এক নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ, চাপ দিয়ে মহিলাকে বিজেপি ছাড়তে বাধ্য করেন ওই তৃণমূল নেতা। তৃণমূলের পার্টি অফিসে এসে মুচলেকা দেওয়ার কথাও বলা হয়। ওই মহিলার স্বামীর দাবি, রবিবার সকালে সেই মুচলেকা দিতেই তৃণমূলের মকরামপুরের দলীয় কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। সেখানেই ওই তৃণমূল নেতা তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। তৃণমূল নেতার গ্রেপ্তারের দাবিতে রবিবার বিকালে পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে অবস্থানে বসেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। পরে অবশ্য পুলিশি আশ্বাসে অবস্থান উঠে যায়। তৃণমূল নেতা ও তাঁর এক সঙ্গীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নির্দিষ্ট ধারায় ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। রাতেই ওই মহিলার মেডিক্যাল টেস্টও হয়।
জেলা বিজেপির সহসভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির অভিযোহ, গ্রেপ্তার তো দূরের কথা। এখনও জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও ওই নেতাকে ডেকে পাঠায়নি পুলিশ। স্থানীয় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার জানার দাবি, কী হয়েছে তিনি জানেন না। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কিছু ঘটে থাকলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে। জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, দুই পক্ষের লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ওই মহিলা এক সময় বিজেপি করতেন। তাঁর স্বামীর একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। বিজেপি করার অপরাধে গত কয়েক বছর ধরে নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হয়েছে। এরপরই তাঁদের মুচলেকা দিয়ে বিজেপির ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।