অর্ণব দাস, বারাসত: মধ্যমগ্রামে পিসিশাশুড়ি খুনের ঘটনায় এবার পুলিশের মুখোমুখি মৃতা সুমিতা ঘোষের দাদা ওরফে ধৃতের শ্বশুর। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হল ধৃত ফাল্গুনী ঘোষের শ্বশুর সুবল ঘোষকে। নিহত সুমিতা ঘোষ আবার তাঁর বোন। তাই পিসিশাশুড়ির সঙ্গে ঠিক কীরকম সম্পর্ক ছিল ফাল্গুনী ও তাঁর মা আরতি ঘোষের, সেসব সুবলবাবুর কাছে জানতে চান তদন্তকারীরা।
সংবাদ মাধ্যমে পু্ত্রবধূ ফাল্গুনী সম্পর্কে সুবলবাবুর তোলা অভিযোগ-সহ সুমিতাদেবীর মধ্যমগ্রামে আসা সম্পর্কে জানতেন কি না, এই সংক্রান্ত বিষয় এদিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। এদিকে, সোমবার পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষের পর ফের ফাল্গুনীকে বারাসত আদালতে পেশ করা হয়। আবারও ৫ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে আবেদন জানায় মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। আদালত তিনদিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে বিয়ে আসামের জোড়হাটের বাসিন্দা সুবল ঘোষের ছেলে শুভঙ্করের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ফাল্গুনীর। বিয়ের পর থেকেই ফাল্গুনীর উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রা চোখে পড়ে শ্বশুরবাড়ির সকলের। প্রথম সন্তানের জন্মের একমাস পরই মৃত্যু হয়। তার জন্য ফাল্গুনী নেশাসক্ত জীবনকে দায়ী করেছিলেন শ্বশুর সুবল ঘোষ। এখন ফাল্গুনী আর শুভঙ্করের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে বোন সুমিতা ঘোষকে মধ্যমগ্রামে দক্ষিণ বীরেশপল্লির ভাড়া বাড়িতে ফাল্গুনী ও তাঁর মা আরতি মিলে খুন করেছে, এই অভিযোগ শোনামাত্রই ফোনে ফাল্গুনীর আচরণ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন সুবলবাবু। ফাল্গুনীর নিয়মিত মদ্যপান করা থেকে স্বামীকে ব্ল্যাকমেল করা থেকে একমাসের নাতির মৃত্যুর জন্য পুত্রবধূর জীবনযাপনকে দায়ী করেছিলেন তিনি।
তবে বোন সুমিতা ঘোষ যে ফাল্গুনীদের মধ্যমগ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন, সেটা জানতেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন সুবল ঘোষ। সেসব বিষয় যাচাই করতেই তাঁকে সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার আহিরিটোলা ঘাটে ট্রলিতে মৃতদেহ ফেলতে এসে গ্রেপ্তার হয় মা-মেয়ে। পুলিশ জানতে পারে, তারা মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা ফাল্গুনী ও আরতি ঘোষ। ফাল্গুনী পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষকে খুনের পর দেহ টুকরো করে লোপাটের উদ্দেশে ট্রলিতে করে গঙ্গায় ভাসাতে এসেছিল। সেই ঘটনায় এবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হল মৃতার দাদা তথা ধৃত ফাল্গুনীর শ্বশুরকে।