স্টাফ রিপোর্টার: বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের প্রথমদিন। সময়েই বিধানসভায় পৌঁছে বিজেপির পরিষদীয় দলের ঘরে চলে এসেছিলেন অন্যান্য দিনের মতোই। অধিবেশন কক্ষে না গেলেও পরিষদীয় দলের ঘরে বসেই হাল্কা গল্পগুজবও করলেন দলের অন্য বিধায়কদের সঙ্গে। লাঞ্চও করলেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ হঠাৎ উধাও। তারপর খবর তৃণমূল ভবনে পৌঁছে গিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। হতভম্ব বিজেপি।
বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দল ভাবতেই পারেনি এমন কিছু ঘটতে চলেছে। একেবারে নিখুঁত অপারেশন তৃণমূলের। ঘুণাক্ষরেও টের পাননি বিজেপি বিধায়করা। জানতে পারার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, বিধায়ক থাকলে জেলা সভাপতি হতে পারবেন না, তাই দল ছেড়েছেন তাপসী। আর সামনের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিটও দেওয়া হত না। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের ঘরেও আসেন বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। পরিষদীয় দলের ঘরে কয়েকজন বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টাও করেন। কয়েকজনের সঙ্গে দুপুরের আহারও সারেন। আবার বিরোধী দলনেতার ঘরেও কিছুক্ষণ বসেছিলেন বলেও খবর। বিরোধী দলনেতার একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র অন্যান্য বিধায়কদের সঙ্গে তাপসীর হাতেও দেওয়া হয়। পরিষদীয় দলের ঘরে লাঞ্চ করার পর নিজের কিছু কাগজপত্র নিয়ে দুপুর দেড়টার পর বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান তাপসী। তখনও কেউ আন্দাজও করতে পারেননি যে দলের এই বর্ষীয়ান বিধায়ক গুডবাই জানাতে চলেছেন পদ্মশিবিরকে। এরপর দুপুর আড়াইটের পর বিধানসভায় আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ততক্ষণে খবর ছডি়য়ে গিয়েছে যে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন তাপসী। সেই খবরে হতবাক বিজেপি বিধায়করাও।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই অবশ্য নিরাপত্তা রক্ষী ছেড়ে দিয়েছিলেন তাপসী। হোয়াটস আপের ডিপিও এদিন বদলে ফেলেছিলেন তিনি। তাপসীর দল ছাড়ার পর শুভেন্দু এদিন হুঙ্কার দিয়েছেন, “দলবদলু বিশ্বজিৎ দাস, মুকুটমণি অধিকারী, কৃষ্ণ কল্যানীকে আমরা লোকসভা ভোটে হারিয়েছিলাম। তাপসীকেও হারাব।” তবে কেন তাপসী দল ছাড়ল, তা নিয়ে অবশ্য বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে চর্চা চলেছে এদিন বিধানসভার অলিন্দে। কয়েকজন মনে করছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয়েছিল তাপসীর। তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গেও মতবিরোধ তৈরি হয়। তারপরই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত। উল্লেখ্য, ছাব্বিশের ভোট বাকি আর এক বছর। তার আগে এখন থেকেই ভাঙন কাঁটায় বিদ্ধ পদ্মশিবির। সেই আশঙ্কার কথা এদিন শোনা গিয়েছে দলের অন্দরে।