কৃষ্ণকুমার দাস: রাস্তায় রাস্তায় কলের মাধ্যমে জল নষ্ট বন্ধ করতে এবার কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রায় ৭৩ হাজার স্ট্যান্ড পোস্ট তুলে দেওয়ার ভাবনার কথা জানালেন পুর ও নগরোয়ন্নন মন্ত্রী তথা ফিরহাদ হাকিম। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন, ”রাজ্যজুড়ে প্রায় ৭৩ হাজার স্ট্যান্ড পোস্ট আছে। সেখানে কল লাগানো হয়েছে। কিন্তু কলে জলের প্রেশার কম থাকলে লোকজনই তা ভেঙে দেন। জল অপচয় বন্ধ করতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা ভেঙে যদি অপচয়ই হয়, তাহলে তা তুলে দেওয়াই ঠিক হবে। আমরা তেমনই ভেবেছি। আর তাছাড়া এখনও বেশিরভাগ ঘরে ঘরে জল পৌঁছে গিয়েছে। তাই সমস্যাও কম।” অর্থাৎ মন্ত্রী বোঝাতে চাইলেন, রাস্তার কলের উপর সেভাবে নির্ভরশীল নন অনেকেই।
বিভিন্ন পুর এলাকার রাস্তায় রাস্তায় ট্যাপ কল আছে, যা পুরসভার তরফেই বসানো। একেকটা ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দারা তা ব্যবহার করেন। তাতে অনেক কাজই হয়। কিন্তু অনেক জায়গায় দেখা যায়, ওইসব কল ভেঙে পাইপ থেকে সোজা জল বেরিয়ে অকারণে অপচয় হচ্ছে। আর তা রুখতেই নয়া পদক্ষেপ নিচ্ছে পুর দপ্তর। সোমবার ফিরহাদ হাকিম জানান, ”সরকারের নীতি হচ্ছে স্ট্যান্ড পোস্ট কমানো। কারণ, এখন ঘরে ঘরে জল পৌঁছে গিয়েছে। তেমন হলে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাঙ্ক তৈরি হোক। রাজ্যে এখন প্রায় ৭৩ হাজার স্ট্যান্ড পোস্ট আছে। তার মধ্যে ৭০ হাজার ট্যাপ বসানো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায় জলের প্রেশার কম থাকলে অধৈর্য হয়ে লোকজন কল ভেঙে ফেলছে। তাতে সরাসরি পাইপের জলে অনেক তাড়াতাড়ি কাজ হচ্ছে। কিন্তু জনগণের জন্যই তো এটা করা। তাঁরা যদি কল ভেঙে জল অপচয় করে, তাহলে আমরা কেন তা রাখব? তাই স্ট্যান্ড পোস্ট তুলে দেওয়ার ভাবনা চলছে।”
ফিরহাদের আরও বক্তব্য, ”দেখুন, জল হল জীবন। মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে জীবনের জন্য তো কোনও কর নেওয়া যায় না। তাই রাজ্যে জলের কোনও কর নেই। কিন্তু সম্প্রতি জল উৎপাদনের খরচ বেড়ে গিয়েছে অনেক। আগের চেয়ে তিনগুণ প্রায়। এখনই আমরা ৬৪ লক্ষ বাড়িতে জল পৌঁছে দিয়েছি। মার্চে আরও ১১ লক্ষ ৮২ হাজার বাড়িতে তা পৌঁছে যাবে। ফলে জলের সমস্যা আর থাকার কথা নয়। এই পরিস্থিতিতে স্ট্যান্ড পোস্ট আর রাখার দরকার হবে না।”