• কোন অঙ্কে তাপসী মণ্ডল বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূলে গেলেন?‌ নেপথ্যে রয়েছে বড় ঘটনা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১১ মার্চ ২০২৫
  • আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। এটা গতকাল সকলেই দেখেছেন। কিন্তু নেপথ্যে রয়েছে অনেক বড় কাণ্ড। এই তাপসী মণ্ডল আগে সিপিএমে ছিলেন। ভরা তৃণমূল কংগ্রেসের বাজারে তাঁকে হারানো যায়নি হলদিয়ায়। তখন তৃণমূল কংগ্রেসে ছিল গোটা অধিকারী পরিবার। শুভেন্দু অধিকারী তখন মন্ত্রী। তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন সাংসদও ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপরও হলদিয়া জেতা যায়নি। কারণ নেপথ্যে আর একজন ছিলেন। যিনি অত্যন্ত দক্ষ সংগঠক। প্রচারের আলোয় তিনি আসেন না। কিন্তু এবার তাঁকে সকলেই দেখতে পেলেন। যাঁর হাত ধরেই বারবার তাপসী মণ্ডল বিধায়ক হয়েছেন।

    তাপসী মণ্ডল অত্যন্ত সাধারণ ঘরের গৃহবধূ। তাঁকে যে সামনে নিয়ে এসে হলদিয়া আসন জেতা সম্ভব এটা সিপিএমকে প্রথম জানিয়েছিলেন শ্যামল মাইতি। কে এই শ্যামল মাইতি?‌ সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুরে দক্ষ সংগঠক ছিলেন তিনি। আর তাঁর হাতযশেই শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন জেতাতে পারেনি হলদিয়া আসন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে শ্যামল মাইতিকে মিথ্যে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার করিয়ে দেওয়া হয়। তখন তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে হবে। এটা শ্যামল মাইতিরই দাবি। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হয়ে আইনি পথে লড়াই করে বাইরে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু সিপিএম তাঁকে জেলা সম্পাদক করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটা পালন করেনি।


    এই অভিযোগ তুলে শ্যামল মাইতি সিপিএম ত্যাগ করেন। সঙ্গে বেরিয়ে যান বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। শুভেন্দুর সঙ্গে মতবিরোধ থাকলেও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল শ্যামল মাইতির। কারণ এই শ্যামল মাইতি কাজ করে আসছেন লক্ষ্মণ শেঠের জমানা থেকে। ফলে শুধু হলদিয়া নয়, গোটা পূর্ব মেদিনীপুরের প্রত্যেকটি বাড়ি, ঘর থেকে শুরু করে ইট–কাঠ–পাথর তাঁর নখদর্পণে। তাপসী মণ্ডলকে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে আনেননি। বিজেপিতে শ্যামল মাইতির হাত ধরেই তাপসী মণ্ডল আসেন এবং বিধায়ক হন। এমনকী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জয়ের কারিগরও এই শ্যামল মাইতি।

    তাহলে বিজেপি ছাড়লেন কেন?‌ সম্প্রতি শ্যামল মাইতি গোষ্ঠীর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর অনুগামীদের সম্পর্কে চিড় খায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মারাত্মক আকার নেয়। তখন এই শ্যামল মাইতিকে খুনের হুমকি দেন শুভেন্দু অধিকারী বলে অভিযোগ তোলেন এই দক্ষ সংগঠক। শুধু তাই নয়, এই খুন করার অভিযোগ তুলে শ্যামল মাইতি চিঠি লেখেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। যে চিঠি একমাত্র হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেন শ্যামল মাইতি। ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, তাঁকে প্রাণে মারার চক্রান্ত করা হচ্ছে। আর হলদিয়ায় তোলাবাজি করতে পারছে না শুভেন্দু অধিকারী। তাই রাগ। তাই তাঁকে পার্টি ছাড়তে হচ্ছে। আর হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটালকে একান্ত টেলিফোনে শ্যামল মাইতি বলেন, ‘‌এবার আবার প্রমাণ করে দেব শুভেন্দুর গড় বলে কিছু নেই। আবার তাপসী মণ্ডলকে জেতাবো। আমাকে খুন করার ছক কষা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী অনেক কাজ করছেন। তাই তাঁকে এবার হলদিয়া আসন জিতিয়ে সম্মান তুলে দেবো।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)