যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'আজাদ কাশ্মীর' গ্রাফিতি, আঙুল 'অতি-বামদের' দিকে
হিন্দুস্তান টাইমস | ১১ মার্চ ২০২৫
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আঁকা হল 'আজাদ কাশ্মীর' এবং 'ফ্রি প্যালেস্তাইন' গ্রাফিতি। এর জেরে এবার শুরু হল নতুন বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ এই ঘটনায় 'অতি-বাম সংগঠনকে' দায়ী করেছে। এদিকে এই ঘটনায় কোনও ভাবে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে সিপিআইএম-এর ছাত্র ইউনিট এসএফআই। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেটের কাছে একটি দেয়ালে 'আজাদ কাশ্মীর' ও 'ফ্রি প্যালেস্টাইন' লেখা গ্রাফিতি দেখা গিয়েছে। তবে এর পিছনে কে বা কোন সংগঠন রয়েছে তা জানা যায়নি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ শাখার সভাপতি কিশোরালয় রায় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, 'এর পিছনে কিছু অতি-বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের হাত রয়েছে।' অপরদিকে সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া দেওয়াল লিখনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। তাদের ইউনিটের নেতা অভিনব বসু বলেছেন যে তাঁদের সংগঠন 'বিচ্ছিন্নতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি' সমর্থন করে না। তাঁর কথায়, 'আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করি না। যদিও আমরা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে।'
গত কয়েকদিন ধরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর বিক্ষোভে উত্তাল ছিল। তবে ১০ মার্চ থেকে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ইনস্টিটিউটে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে ক্যাম্পাসে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীর ঢুকে পড়ায় পড়ুাদের মধ্যে ফের অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এসএফআই এবং এইডসো এবং শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক ইউনিয়ন জুটা এবং আবুটার কর্মীরা দাবি করেন, ১০ মার্চ দুপুর ১টা নাগাদ প্রায় ৩০ জন পুলিশ কর্মী সাদা পোশাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন এবং ক্লাস শেষ হওয়ার পর বিকেল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এসএফআই নেতা সৌর্যদীপ্ত রায় বলেন, ওম প্রকাশ মিশ্র ক্যাম্পাসে ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই সাদা পোশাকের পুলিশকে দেখতে পায় পড়ুয়ারা। এরপরই ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং শাসক দল তৃণমূল ও রাজ্য প্রশাসনের ভয়ভীতি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত করার দাবিতে স্লোগান দেন।
এর আগে গত ১ মার্চ অভিযোগ ওঠে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি প্রায় পিষে দিয়েছিল ইন্দ্রানুজকে। একদিকে যেখানে যাদবপুরে ব্রাত্যের 'গাড়িতে ছাত্রের চাপা পড়ার' অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করছে তৃণমূল। অপরদিকে ইন্দ্রানুজের গাড়ির সামনে পড়ে থাকার দৃশ্য সম্প্রচারিত হয়েছে খবরের চ্যানেলে। সেই ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা যায়, ইন্দ্রানুজ বাঁ চোখ ও মাথায় আঘাত পান। উল্লেখ্য, তৃণমূল প্রভাবিত ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে ব্রাত্য বসু যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন ১ মার্চ। সেখানে প্রথম থেকেই গেটে অবরোধ করে রেখেছিলেন পড়ুয়ারা। ছাত্র সংসদের ভোটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেট দিয়ে ব্রাত্য বসু প্রবেশ করেছিলেন ক্যাম্পাসে। তবে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় ব্রাত্যকে ঘিরে ধরেন আন্দোলনকারীরা। বামপন্থী এবং অতি বাম ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে রীতিমতো তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে ইট ছোড়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় পাইলট গাড়ি। শিক্ষামন্ত্রী আহতও হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের পালটা দাবি, মন্ত্রীর গাড়িতে চাপা পড়েছেন এক ছাত্র। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে ব্রাত্য বসুও এসএসকেএমে গিয়েছিলেন অসুস্থ হয়ে। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে এরপর সেদিন রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন 'শিক্ষাবন্ধু'র অফিসে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়। এদিকে জখম পড়ুয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কয়েকজন ছাত্রীর বিরুদ্ধে।