মেদিনীপুর কলেজের ছাত্রীকে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ স্টেট পুলিশ অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর তথা রাজ্য পুলিশের আইজি মুরলিধর শর্মার কাছে ওই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলমালের আঁচ পড়েছিল মেদিনীপুর কলেজেও। যাদবপুরের ছাত্রদের উপর অত্যাচারের অভিযোগকে সামনে রেখে মেদিনীপুর কলেজের সামনে গত সপ্তাহে বিক্ষোভ দেখায় একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। অভিযোগ ওঠে, বিক্ষোভকারী কয়েক জন ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় সেখানকার কোতোয়ালি থানার পুলিশ। অভিযোগ, তাঁদের মারধর করা হয়। সেই ছাত্রীদের মধ্যেই একজন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে।
মামলাকারীর অভিযোগ, যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে ৫ মার্চ মেদিনীপুর কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে আন্দোলন চলছিল। সেখান থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় তাঁদের। মামলাকারীর বক্তব্য, মাঝরাতে গ্রেপ্তার না দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার আগে পুলিশ লকআপে মারধর করা হয়, গালিগালাজও করা হয়। মামলাকারী আদালতে জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক। কলেজের ভিতরের ভিডিয়ো ফুটেজও আছে। তা দেখা হোক।
মঙ্গলবার মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘আগে অভিযোগের অনুসন্ধান হওয়া উচিত। তারপরে এফআইআর হবে কি না সেটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।’
রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত বলেন, ‘যখন তরুণী থানায় আসেন, তাঁর সঙ্গে একাধিক আইনজীবী ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ আছে। তাঁকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়, থানার হেফাজতে তিনি ঘুমোন। বিকালে কোনও একটা সংগঠনের সঙ্গে চ্যাট করতে থাকেন। মিথ্যা অভিযোগ করে পুলিশের নীতি আদর্শকে ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বিচারপতি জানান, পুলিশের বক্তব্য নিয়ে আপত্তি থাকায় হলফনামা দিতে হবে। থানার ওসিকে সেই হলফনামা দিতে হবে। একই সঙ্গে আইজি মুরলীধর শর্মাকে তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা-সহ তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন আদালতকে। ২৬ মার্চ পরবর্তী শুনানি হবে।
অন্য দিকে ডিএসও নেত্রী সুশ্রীতা সোরেনও আদালতে গিয়েছিলেন এই একই ঘটনাকে সামনে রেখে। তাঁর আবেদনের শুনানি হবে বুধবার। কারণ, নথি পড়ে আদালতের মনে হয়েছে এই মামলায় কিছু ভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।