প্রবল জনপ্রিয় ‘মা ক্যান্টিন’-এর সুলভ আহার, তথ্য ফিরহাদের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ মার্চ ২০২৫
গ্রামাঞ্চল বা শহরতলি থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে কাজে আসা দরিদ্র মানুষের ভরসাস্থল হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মস্তিস্কপ্রসূত ‘মা ক্যান্টিন’। মাত্র ৫ টাকাতেই পেট ভরে খাওয়া যায় এই ক্যান্টিনে। খাদ্যের তালিকায় রয়েছে ভাত, সবজি থেকে ডিম। এবার এই ‘মা ক্যান্টিন’-এর প্রসারে মনোনিবেশ করল রাজ্য সরকার। মা ক্যান্টিনের মানোন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যেই ১২৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ হয়েছে। বিধানসভায় তথ্য তুলে ধরে মা ক্যান্টিনের প্রসারের বিবরণ দেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল। বর্তমানে ব্লক, পুরসভা ও কর্পোরেশন এলাকায় চলছে মা ক্যান্টিন। পাশাপাশি ৩৩টি মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালেও এই ক্যান্টিন চালু রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি মাসে প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ এই ক্যান্টিনের খাবার খান। এখনও পর্যন্ত সাড়ে সাত কোটির অধিক মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, ‘বর্তমানে রাজ্যের ৩৩১টি জায়গায় চলছে মা ক্যান্টিন। এই সংখ্যাটা আরও বৃদ্ধি করার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগী। সেই লক্ষ্যে অতিরিক্ত বরাদ্দও করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০২১-র নির্বাচনের আগে চালু হওয়া মা ক্যান্টিন অল্প সময়েই বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। নির্বাচনী প্রচারের ট্রাম্ফকার্ড থেকে ২০২১-এ তৃণমূলের বিপুল জয়ের অনুঘটক হয়েছিল এই প্রকল্প। বছর ঘুরলেই ফের বিধানসভা নির্বাচন। আবারও মা ক্যান্টিনের উন্নয়নে জোর দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী, ছাতা ধরতে চাইছেন দরিদ্র মানুষের মাথায়। প্রথমে মাত্র ৩২টি ক্যান্টিন নিয়ে চালু হয়েছিল ওই প্রকল্প। ২০২২-এ সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ২১২টি। বর্তমানে এর সংখ্যা ৩৩০ ছাড়িয়েছে। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের দিয়েই চালানো হয় মা ক্যান্টিন। ফিরহাদ বলেন, ‘যাঁরা দূরদূরান্ত থেকে শহরে কাজে আসেন, সকালে খাবার বানিয়ে আনতে পারেন না অথবা অর্থাভাবে বাইরের খাবার খেতে পারেন না। তাঁদের কথা ভেবেই স্বল্পমূল্যে পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য পথ চলা শুরু করেছিল মা ক্যান্টিন। অফিস পাড়া থেকে কোর্ট চত্বরে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।’ গতবছর নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বাজার এবং ‘হকিং’ এলাকায় মা ক্যান্টিন চালুর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেই ওই বিষয়ে কাজ শুরু করেছিল রাজ্য সরকারের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের মাস-সাতেক পেরিয়েছে, এখন কী অবস্থায় রয়েছে মা ক্যান্টিন? তথ্য তুলে তারই বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিলেন ফিরহাদ হাকিম। রাজনৈতিক মহল বলছে, মা ক্যান্টিনের প্রসারে রাজ্য সরকারের মনোনিবেশ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা নিতে পারে আগামী নির্বাচনে।