নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া টাকা শোধের জন্য রিকভারি এজেন্টদের হুমকি। চাপের মুখে পরিবার-সমেত একাধিক আত্মহত্যার ঘটনাও দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। দক্ষিণ কলকাতার হালতু থেকে নদিয়ার চাপড়া, তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। এবার ঋণের ‘বকেয়া’ টাকা নিতে এসে আক্রান্ত হলেন সংস্থার দুই এজেন্ট। স্থানীয় মহিলারা তাঁদের আটকে রেখে ঝাঁটাপেটা করলেন। অভিযোগ, টাকা মিটিয়ে দেওয়ার পরেও এজেন্টরা ‘পাওনা’ নিতে সেখানে গিয়েছেন। পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান কর্মীরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুরে।
দুবরাজপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু পরিবার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছিল। সেই টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার পরেও বারবার টাকা চাওয়া হচ্ছিল সেই প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ওই সংস্থার দুই কর্মী টাকা আদায়ের জন্য এলাকায় গিয়েছিলেন। ওইসব পরিবারের কথা মানা হয়নি। বরং ‘বকেয়া’ সব টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া চলতে থাকে। এই অবস্থায় ওই দুই কর্মীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় স্থানীয়দের।
এরপরেই ওই দুই কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তাঁদের আটকে রাখা হয় এলাকায়। ওই সংস্থার আরও এক কর্মী সেখানে গেলে, তাঁকেও ধরে রাখা হয়। এলাকার মহিলারা তিনজনকে ঝাঁটাপেটা করেন। লাঠি দিয়েও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঋণ নেওয়া টাকা পরিশোধ করা হয়েছে আগেই। কিন্তু ওই সংস্থার তরফে দাবি করা হচ্ছে, টাকা শোধ হয়নি। কেন এমন মিথ্যাচার চলছে? সেই প্রশ্ন ওঠে। ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা কিস্তির টাকা নিয়েও জমা করেননি। ফলে বাকি পড়ে থাকছে ঋণের টাকা। টাকা দাবি করে ঘরের দরজা ভেঙে ফেলার অভিযোগও উঠেছে এজেন্টদের বিরুদ্ধে। যদিও সেসব প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি ওই সংস্থার কর্মীরা।
সন্ধ্যা থেকে বেশ কয়েক ঘণ্টা ওই এজেন্টদের আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দুবরাজপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে আটক কর্মীদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে ওই সংস্থার আধিকারিকরা থানায় পৌঁছন। পুলিশকে জানানো হয়, আগামী ২৯ মার্চ ওই গ্রাহকদের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) দেওয়া হবে। সেই বিষয়ে মুচলেকাও দেওয়া হয়। এরপরেই ছাড়া পান ওই কর্মীরা। ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।